ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলা করেছে পুলিশ। শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালালে এর সূত্রপাত ঘটে। পরে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া খেয়ে শ্রমিক লীগের লোকেরা পালিয়ে গেলে আন্দোলনকারীদের উপর টিয়ারসেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি থমথমে হয়ে আছে।
আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা ও অসদাচরণের পর তাদের পায়ের কাছে রাবার বুলেট ছুঁড়েছে পুলিশ। এতে দুজন সাংবাদিক আহত হন।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের মুজিব সড়ক থেকে এক গ্রুপ এবং ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের দিক থেকে আরেক গ্রুপের বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। সেখান থেকে তাদের শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে সমবেত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুজিব সড়কে ডিসি অফিস, প্রেসক্লাব ও জনতা ব্যাংকের মোড়ে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করতে পারেনি। এ অবস্থায় তারা পশ্চিম খাবাসপুরে মেডিক্যাল কলেজের অদূরে বটতলায় সমবেত হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক হয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি এলে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ের দিক থেকে শ্রমিক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শ’ দুয়েক নেতাকর্মী হামলা চালায়। তারা মিছিলকারীদের উপর ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। তবে আন্দোলনকারীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ এসে বাঁধা দিলে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা নিরস্ত্র ছিলেন। স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে সামনে এগোনোর সময় প্রথমে আওয়ামী লীগের লোকেরা হামলা করে। এ সময় তারা রাস্তার পাশে ইট-খোয়া দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করেন। তারা পালিয়ে গেলে ভাঙ্গা রাস্তার মোড় থেকে পুলিশ তাদের দিকে প্রথমে টিয়ারগ্যাস এবং পরে রাবার বুলেট ছুঁড়ে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে এতে রনি নামে একজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও পাওয়া গেছে।
এদিকে, সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে যেয়ে আজকের কাগজের প্রতিনিধি শ্রাবণ হাসান, দৈনিক ফতেহাবাদের জাকিব হোসেন ও ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি জহির উদ্দিন আহত হন।
শ্রাবণ হাসান বলেন, তারা ভিডিও করার সময় একজন পুলিশ বলতে থাকেন, পুলিশের ভিডিও করেন কেনো? ভিডিও পুটকির মধ্যে ভরে দিবো বলেই তাদের পায়ের দিকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ে। এতে সাংবাদিক শ্রাবণ হাসান ও জাকিব পায়ে ও মুখে আহত হন।