ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দুই নৌকায় পা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম। আজ শনিবার রাজধানীর মগবাজারে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক অবস্থা চরম আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য চীন ও ভারতে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ভিক্ষা করতে গিয়েছিল। তাদেরকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ এখন দুই নৌকাতে পা দিয়েছে। তাদের পক্ষে এই অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব না।

এলডিপি প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশে চরম অবস্থা বিরাজ করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনগণের জীবনে দুর্বিষহ নেমে এসেছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনো মিল নেই। যার কারণে মানুষ অতি কষ্টে জীবনযাপন করছে। এর মধ্যে সরকারের বড় বড় কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বের হচ্ছে। যাদের নাম বের হয়েছে বা আগামীতে বের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এরা সবাই সরকারের মদদপুষ্ট। সরকারের অপকর্মের সঙ্গে তারা জড়িত। নিশিরাতের নির্বাচন ও গোপন কক্ষের নির্বাচনে সঙ্গে তারা জড়িত। এই অবৈধ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে তারা ভাগিদার।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকার যে ব্যবস্থা নিচ্ছে তা যথেষ্ট নয়। এমনকি পিএসপিতে সর্বশেষ যে ঘটনা ঘটেছে, এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা না নিয়ে পিএসপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি পদে থাকা অবস্থায় কীভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলো? এটা অনেক বড় অপরাধ। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া বাঞ্চনীয়।’

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হচ্ছে। তাদের ছেলে-মেয়ে-নাতিরা চাকরি পাচ্ছে। এখানে সাধারণ লোকেরা বঞ্চিত হচ্ছে। মেধার ভিত্তিতে পদায়ন হচ্ছে না। এতে দেশ মেধা শূন্য হচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা বিদেশে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে গাধা-ঘোড়ারা দেশ পরিচালনা করবে।’

মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে এলডিপি প্রেসিডেন্ট বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা লুণ্ঠন করেছে, লাখ লাখ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ঋণ হচ্ছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। এই ঋণ পরিশোধ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীন খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে দাবি করে অলি আহমদ বলেন, যার জন্য সময়ের আগেই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশের অবৈধ সরকারকে কোনো সম্মান দেওয়া হয়নি। এটা ওনার অপমান না, বাংলাদেশের ওপর একটা আঘাত। এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো যুক্তি নাই। কারণ তারা ১৫ বছর অন্যায়ভাবে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। টাকা লুটপাট করছে।

এ সময় আরও ছিলেন যুগপৎ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান।