বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আজ হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী রাস্তায় নেমেছে। ৫৬ শতাংশ কোটা বিশ্বের কোনো দেশে নেই। কোটা ব্যবস্থা অসভ্যতার পরিচায়ক। এই কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে আমরা অকুণ্ঠ সমর্থন জানাই।’

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি, দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ও সর্বগ্রাসী দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতারের দাবিতে’ আলোচনা সভাটির আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্রসমাজকে বলব, মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আশা করি কোটা আন্দোলন সফল হলে তোমাদের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে রাজপথে লড়াই করতে হবে। আমরা তোমাদের সঙ্গে থাকব, ইনশাআল্লাহ।’

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানে রেখে বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘১৯৭১ সালে ‘‘সাম্য, সামাজিক সুবিচার ও মানবিক মর্যাদা’’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলাম। মূলত গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু সেই গণতন্ত্র দেশে নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি চাই না। মেধার ভিত্তিতে চাকরি চাই। আজ যাদের মুক্তিযোদ্ধা রাখা হয়েছে, তারা কারা? যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ছিল ৮০ হাজার। তারা কোনো কোটা চাননি। এখন কোটা রাখা হয়েছে ভুয়া আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। আমরা খুব বড়জোর ৫ ভাগ কোটা রাখার পক্ষে। বিশ্বাস করছি-সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার সঙ্গে আমার বহু বছরের পরিচয়। রাজনীতিতে আসার অনেক আগে থেকে। তাকে সব সময় আমি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী দেখেছি। কিন্তু সম্প্রতি কোরবানি ঈদের সময় দেখলাম তিনি কথা বলতে বলতে হাঁপিয়ে ওঠেন। এ সরকার তাকে সুচিকিৎসা দেয়নি। তিনি কখনো নির্বাচনে ফেল করেননি। এমনকি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে নির্বাচন করলেও পাস করবেন।’

ভারতের সঙ্গে সরকারের করা চুক্তির সমালোচনা করে বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোনো চুক্তির আগে জনগণের সমর্থন নিতে হবে। কিন্তু যে চুক্তি জনগণ জানে না, সেই চুক্তি আমরা কেউ মানি না।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমদ খান ও এর নেতা শাহাব উদ্দিন রেজার পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রমুখ।