বাংলা একাডেমির ফেলো কবি মাকিদ হায়দার চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসায় মারা যান তিনি। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। কবির আসিফ হায়দার হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন। মাকিদ হায়দার দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। বাসায় তার চিকিৎসা চলছিল।
ছেলে জানান মাকিদ হায়দার প্রতিদিন সকালে উঠতেন। আজ না ওঠায় তার ছেলের বউ দরজা নক করে সাড়া না পেয়ে ভেতরে গিয়ে দেখেন তার পালস নেই।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা জানিয়েছেন, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মাকিদ হায়দারের মরদেহ আজ বেলা ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত একাডেমির নজরুল মঞ্চে রাখা হবে। পাবনায় পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, তার ভাই নাট্যকার জিয়া হায়দার, লেখক গবেষক রশিদ হায়দার, কবি দাউদ হায়দার, জাহিদ হায়দার, আরিফ হায়দার– সবাই সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।

১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনার দোহারপাড়ায় মাকিদ হায়দারের জন্ম। তার পিতা মোহাম্মদ হাকিম উদ্দিন শেখ ও মাতা রহিমা খাতুন।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন। তিনি ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণসংযোগ ও গণমাধ্যম বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার (বিসিক) মহাব্যবস্থাপক ছিলেন।

মাকিদ হায়দারের সাহিত্যচর্চার শুরু হয় ছড়া দিয়ে। গল্প ও নাটক লিখলেও শেষ পর্যন্ত থিতু হন কাব্যচর্চায়। প্রিয় রোকোনালী তার কবিতার বিশেষ চরিত্র। তিনি ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।
তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ— ‘রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা’, ‘আপন আঁধারে একদিন’, ‘ও প্রার্থ ও প্রতিম’, ‘কফিনের লোকটি’, ‘প্রিয় রোকোনালী’, ‘মুমুর সাথে সারা দুপুর’, ‘অদৃশ্য মুখগুলো’, ‘যে আমাকে দুঃখ দিলো সে যেন আজ সুখেই থাকে’, ‘পাকশী লোকাল এক্সপ্রেস’ প্রভৃতি। গল্পগ্রন্থ ‘বিপরীতে অন্য কেউ’ এবং ‘মাকিদ হায়দারের গল্প’। গবেষণাগ্রন্থ ‘রবীন্দ্রনাথ: নদীগুলো’।