মালয়েশিয়ায় ম্যাসেজ সেন্টার ও হোটেল ব্যবসার আড়ালে পতিতাবৃত্তির দায়ে ১১ জন বাংলাদেশী নারী ও ৭ জন বাংলাদেশী পুরুষ খদ্দেরসহ বিভিন্ন দেশের মোট ৭৫ জন নারী-পুরুষকে গ্রেফতার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ।

শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুর পৌনে ২টার সময় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কুয়ালালামপুরের ৬টি এলাকায় এবং শাহলম এলাকার ৬টি স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই দেশটিতে বসবাস করার বৈধ কাগজপত্র নেই। বডি ম্যাসেজ ও হোটেল ব্যবসার আড়ালে এসব অনৈতিক কাজ পরিচালনার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে প্রচার করা হতো। তাদের সবার বয়স ১৭ থেকে ৪৬ বছর পর্যন্ত। পতিতাবৃত্তির সময় প্রতিঘণ্টা ১০০ রিংগিত থেকে ৪০০ রিংগিত আদায় করা হয়। এ সময় বিদেশী পাসপোর্ট, নগত অর্থ, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও ১০টি রেজিস্ট্রার বুকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, বাংলাদেশের ১১ জন নারী ও ৭ জন পুরুষ খদ্দের, ইন্দোনেশিয়ার ৩২ জন নারী ও ১ জন পুরুষ, ভিয়েতনামের ৪ নারী, ভারতীয় ৬ নারী, মিয়ানমারের ২ পুরুষ, মালয়েশিয়ার ৮ জন নারী-পুরুষ সহ অন্যন্যা দেশের মোট ৭৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের সবাইকে দেশটির অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩, পাসপোর্ট আইন ১৯৬৬ এবং ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ১৯৬৩ -এর অধীনে অপরাধ করার দায়ে সমস্ত বিদেশী নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আরো তদন্তের জন্য সেমেনিহ ইমিগ্রেশন ডিপোতে নেয়া হয়েছে। আর ৮ জন মালয়েশিয়ান নারী-পুরুষ পতিতাবৃত্তির কাজে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় তাদের কার্যবিধি ১৯৫৯/৬৩ -এর সেকশন ৫৬(১)(ঘ) এবং সেকশন ৫৫-ই এর অধীনে গ্রেফতারপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ, আগে বাংলাদেশী নারীদের মালয়েশিয়ায় পতিতাবৃত্তির কথা না শোনা গেলেও ইদানিং আশঙ্কাজনক বাড়ছে এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতি মুনাফার লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি দালাল চক্র বডি কন্টাক্ট ও ট্যুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়া এনে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ করা হচ্ছে।

একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে, বাংলাদেশী যুবতীদের মালয়েশিয়ায় এনে তাদের জোর করে এবং কিডন্যাপিং করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হচ্ছে।