৪০০ পার করার কথা বলে ভোটে নেমেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে সেই ৪০০ থেকে অনেক দূরেই থেমে গেছে মোদির দল বিজেপি এবং তাদের জোট এনডিএ। তা সত্ত্বেও তৃতীয়বার সরকার গঠনের ঘোষণা দিল বিজেপি। ফল প্রকাশের পর দিল্লিতে বিজেপি হেডকোয়ার্টারে বরণ করে নেওয়া হলো নরেন্দ্র মোদিকে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জয়ের উদযাপন করল পদ্ম শিবির।

এ সময় বিজয়ী ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আপনাদের আশীর্বাদের জন্য ধন্যবাদ। আজ বড় মঙ্গলের দিন। দেশবাসী বিজেপি তথা এনডিএ-র ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখেছেন। আজকের এ জয় দুনিয়ার সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের জয়। ভারতের সংবিধানে অটুট নিষ্ঠার জয় এটি। বিকশিত ভারতের অঙ্গীকারের জয়। ১৪০ কোটি ভারতীয়ের জয় এটি।’

পাশাপাশি তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নিষ্ঠা এবং সততার সঙ্গে সরকার চালাব। সংবিধান আমাদের পাথেয়। বিকশিত ভারতের জন্য, ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এটি। এখন থামার সময় নয়। এগিয়ে চলার সময়।’

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘উড়িশ্যা, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশে অভূতপূর্ব জয় পেয়েছে এনডিএ। এসব এলাকায় কংগ্রেস সাফ হয়েছে। বিজেপি উড়িষ্যায় সরকার গঠন করতে চলেছে। লোকসভাতেও সেখানে দুর্দান্ত ফল হয়েছে। প্রথমবার মহাপ্রভু জগন্নাথদেবের মাটিতে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হবে। কেরালাতেও বিজেপি আসন পেয়েছে। তামিলনাড়ু, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, দিল্লিতেও ভালো ফল করেছে বিজেপি। বিহারেও নিতীশবাবুর নেতৃত্বে ভালো ফল করেছে এনডিএ।’

এ সময় তিনি দুই ‘এন ফ্যাক্টর’ চন্দ্রবাবু নায়ডু ও নিতিশ কুমারকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেলনি। সেইসঙ্গে বিরোধীদের কটাক্ষ করতেও ছাড়লেন না। মোদি বলেন, ‘বিজেপি একলা যত আসন জিতেছে, বিরোধীরা একজোট হয়ে ততগুলো আসনও জিততে পারেনি।’

মোদির কথায়, ‘২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশ অন্ধকারে ডুবে ছিল। প্রতিদিন দুর্নীতির খবরে ভরা থাকত সংবাদপত্র। দেশের যুব প্রজন্মের ভবিষ্যত অনিশ্চিত ছিল। সে সময় দেশের মানুষ আমাদের ওপর ভরসা করেছিল। তারপর ২০১৯ সালে দেশবাসী আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সেই ভরসা অটুট রেখেছিল। এবার তৃতীয়বার আমাদের দেশের মানুষ দুহাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন।’

মায়ের মৃত্যুর পর তার এই প্রথম নির্বাচনে জয়। মোদি বলেন, ‘কখনো দেশের মানুষ আমায় মায়ের অভাব অনুভব করতে দেননি। দেশের কোটি কোটি মা-বোন আমায় নতুন প্রেরণা দিয়েছেন।’

এবারের ভোটে কংগ্রেসের অজয় রাইয়ের বিপক্ষে ভোটে লড়েন মোদি। সেখানে কার্যত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রধানমন্ত্রী সব মিলিয়ে পেয়েছেন ৬ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ ভোট। অর্থাৎ তিনি পেয়েছেন ৫৪ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট।

মোদি এবার হ্যাটট্রিক করেছেন এটা ঠিক। কিন্তু লড়াইটা যে সহজ ছিল না এটা বোঝাই যাচ্ছে। তার ভোট শতাংশ কমে গিয়েছে প্রায় ৯ শতাংশ।

এর আগে, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী পেয়েছিলেন ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৪টি ভোট। অর্থাৎ তার ভোট শতাংশ ছিল ৬৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৪ সালে তিনি পেয়েছিলেন ৫ লাখ ৮১ হাজার ২২টি ভোট। তার ভোট শতাংশ ছিল ৫৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

অর্থাৎ এবার মোদির ভোট কমেছে প্রায় ৯ শতাংশ। এ সংখ্যাটিই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।