অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের জামিন নিয়ে প্রতারণা করার দায়ে তার আইনজীবী নিখিল কুমার সাহা আগামী এক সপ্তাহ কোনো মামলা লড়তে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে শামীমের জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জি কে শামীমের জামিনের আদেশ কার্যতালিকার ৪ নাম্বার সিরিয়ালে ছিলো যা দেখে অবাক হয়ে যান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, এটি কি ভাবে আদেশের জন্য আসে, এ বিষয়ে শুনানিই তো হয়নি।
পরে আইনজীবী নিখিল কুমার সাহাকে এজলাসে ডাকেন প্রধান বিচারপতি। তিনি আইনজীবীকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এটা কি করে হলো?’ এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি আইনজীবী নিখিল কুমার। এ সময় প্রধান বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চালাকি করেন? কটা টাকার জন্য এসব করেন! কেন করেন?’
পরে নিখিল কুমার সাহাকে ১ সপ্তাহ মামলা না লড়তে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। এসময় তিনি পাল্টা যুক্তি দিতে চাইলে প্রধান বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন, বেশী কথা বললে ১ বছর নিষিদ্ধ করা হবে।
এর আগেও জি কে শামীমের জামিন ঘিরে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছিলো হাইকোর্টে। ২০২০ সালে মার্চ মাসে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও আলোচিত ঠিকাদার জিকে শামীম। পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, মাসখানেক আগে করা জামিন আবেদনে পুরো নাম উল্লেখ করেননি তিনি। যদিও জামিন আদেশে ঠিকই লেখা ছিল পুরো নাম।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আলোচিত ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় আটক সাবেক যুবলীগ নেতা ও প্রভাবশালী ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে তিনি জি কে শামীমকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। ২০১৯ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে নাটকীয় এক অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছিল।
নগদ প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা এবং ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর বা আমানতপত্র জব্দ করা হয়। এসময় মদ ও অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে বিদেশে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে।
পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চারটি মামলা হয়। পরের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ত্র মামলায় মি. শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
একই বছর অক্টোবরে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলায় তার বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৯ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।