বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এখন আবার ডামি উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে। আজকে সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতারাও সুযোগ পাচ্ছে না। মন্ত্রী-এমপিদের ভাই, সালা, ভাগিনা, ভায়রাদের কারণে জিম্মি স্থানীয় জনগণ
তিনি বলেন, প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় এমপিরাজ শুরু হয়েছে। তাও ডামি এমপি। আজকে ডামি এমপির স্ত্রী, শ্যালক, ভাই দিয়ে সৃষ্টি করা হচ্ছে এমপিরাজ। এমপি রাজত্বের কারণে জিম্মি গোটা এলাকা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে ৭ দিন ধারাবাহিক কর্মসূচির প্রথম দিনে তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনসাধারণের মাঝে বোতলজাত পানি, স্যালাইন বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম।
রিজভী বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা বারবার বলেছেন, কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন না, কিন্তু গণবিরোধী প্রধানমন্ত্রী গণবিরোধী প্রজেক্ট করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা গলাচিপা, বাউফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে।
তিনি বলেন, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে জিয়াউর রহমান রেশনিং ব্যবস্থা তুলে নিয়েছিলেন। আজকে দেশের অর্থনীতিকে লুটতরাজ করে ভঙ্গুর করে ফেলেছে। মুখে স্বয়ংসম্পূর্ণের কথা বলে আবার রেশনিং ব্যবস্থা চালু করেছেন। তাও সাধারণ মানুষ এর আওতায় নয়, আওয়ামী গোষ্ঠী এই রেশনিং কার্ডও দলীয়করণ করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। আদা, রসুন পেঁয়াজ ডলারের দামে আমদানি করতে হচ্ছে। মানুষ পেট ভরে ভাত খেতে পারছে না। আজকে সন্তান বিক্রি করে পেট চালাতে হচ্ছে।
রিজভী বলেন, ফরিদপুরে ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে দুই হাজার কোটি টাকা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ভাই নাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করেছে। এই আলাদীনের চেরাগ কই থেকে আসলো। কানাডা, দুবাই, মালয়েশিয়া এত বাড়িঘরের মালিক কীভাবে হলেন? একসময় আজিমপুর কবরস্থানে যেতে হবে সেটা তারা ভুলে গেছেন।
ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপির কর্মসূচির দিন কেনো আপনারা পালটা কর্মসূচি দেন? তিনি বললেন, বিএনপিকে মানসিকভাবে বাধা দেওয়ার জন্য আমরা পালটা কর্মসূচি দেই। এতেই প্রমাণ হয় ওবায়দুল কাদেরের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তিনি সন্ত্রাসী ভাষায় কথা বলেন। উনি (ওবায়দুল কাদের) চাঁদাবাজ ও গুন্ডাদের গডফাদার।
আব্দুস সালাম তার বক্তব্যে বলেন, সারাদেশ আগুনে পুড়ছে, মানুষ অভুক্ত আছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলে কোনো অসুবিধা নেই। মানুষ খুব ভালো আছে। জনগণের কোনো কষ্টই তাদের গায়ে লাগে না। কারণ, সাধারণ মানুষকে তাদের চোখে পড়ে না। তিনি শুধু দেখেন মুজিব কোট। আজকে ১ টাকার কাজ করা হচ্ছে একশ টাকায়। বাকি ৯৯ টাকা খরচ হয় মুজিব কোটের পিছনে।
মজনু তার বক্তব্যে বলেন, সরকারের সবাই এসিতে ঘুমান তাই জনগণের কষ্ট তাদের উপলব্ধি হয় না। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই মানুষের কষ্টে এদের কিছু আসে যায় না। এদের লক্ষ্য শুধু বিএনপিকে দমন করা আর লুটপাট করা। তাই এ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মোহন, হাজী মনির হোসেন, সদস্য দপ্তরের দায়িত্বে সাইদুর রহমান মিন্টু প্রমুখ।