যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি আশা করেন, ইরান ‘শীঘ্রই’ ইসরায়েলে হামলা করবে। তেহরানকে সতর্ক করে বাইডেন বলেন, ‘শীঘ্রই হামলা করবেন না।’
ইরানের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বাইডেন। খবর সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্সের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা যে কোনো সময় ইসরায়েলকে সমর্থন করবো। তাদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো ধরনের সহায়তার জন্য সব সময় প্রস্তুত। ইরান কখনও সফল হবে না।’
১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কনস্যুলেটটি। নিহত হন দেশটির শীর্ষস্থানীয় দুই সামরিক কর্মকর্তাসহ ৭ জন। এরপর সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, এই কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
খামেনির হুমকির পর ইরান ও ইসরায়েল-দুই দেশ ভ্রমণে নিজেদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসরায়েলের জনগণও।
যে কোনো সময় পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে এ প্রতিশোধ নেওয়া হতে পারে-এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য হামলা নিয়ে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে শুক্রবার জরুরি বৈঠক করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। দেশটির হাতজোর বিমান বাহিনী ঘাঁটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট, ইউএস সেন্টকম কমান্ডার জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলা, সিনিয়র নেতা ও ইসরায়েলি শীর্ষ পর্যায়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্গি হালেভি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টকম প্রধান জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জেনারেল হার্গি হালেভি বলেন, তারা ‘যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি’ সম্পর্কে একটি ‘বিস্তৃত’ মূল্যায়ন করেছেন। তার দাবি, ‘আইডিএফ যে কোনো হুমকির বিরুদ্ধে আক্রমণ ও প্রতিরক্ষায় ভালোভাবে প্রস্তুত। আমরা যুদ্ধে আছি এবং প্রায় ছয় মাস ধরে উচ্চ সতর্কতায় রয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, শিগগিরই বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে ইরান। এ হামলায় শতাধিক ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনাও রয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোতে এ হামলা হতে পারে। তা ঠেকানো ইসরায়েলের জন্য ‘চ্যালেঞ্জের’ হবে।
এদিকে গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যে ইরান–সমর্থিত বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়াচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির উত্তর সীমান্ত অঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইরাক ও ইয়েমেনের ইরানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠীও ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। আর লোহিত সাগরে ইসরায়েল–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।