ইরানের সম্ভাব্য হামলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ইসরায়েল। দুয়েক দিনের মধ্যেই এ হামলা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে। হামলার ভয়ে শুক্রবার সতর্ক অবস্থায় ছিল ইহুদিবাদী দেশটি। মধ্য ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটি পরিদর্শনের সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা একাধিক ফ্রন্টে ‘চ্যালেঞ্জিং সময়’ পার করছেন।
সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতেই ইহুদিবাদী দেশটিতে সরাসরি আঘাত করতে পারে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির।
দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তাঁর দেশ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ চালানোর পাশাপাশি অন্যান্য এলাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কার মধ্যে বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন।
এদিন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে দেশটির বিমানবাহিনীর তেল নফ ঘাঁটি পরিদর্শনে যান নেতানিয়াহু। এরপর তাঁর কার্যালয় থেকে তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে নেতানিয়াহু বলেন, ‘যারা আমাদের ক্ষতি করবে, আমরাও তাদের ক্ষতি করব। ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা যা করা প্রয়োজন, তা করতে আমরা প্রস্তুত আছি। প্রতিরক্ষামূলক বা আক্রমণাত্মক—দুই ক্ষেত্রেই আমাদের প্রস্তুতি আছে।’
১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাস প্রাঙ্গণে বিমান হামলায় এক জ্যেষ্ঠ জেনারেলসহ ৭ ইরানি কর্মকর্তা নিহত হন। এ ঘটনায় ইরান প্রতিশোধ হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইসরায়েল এ হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেনি। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি গত বুধবার বলেছেন, হামলার জন্য ইসরায়েলকে শাস্তি পেতে হবে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, তারা ‘বিভিন্ন পরিস্থিতি’ মোকাবিলায় ভালোভাবে প্রস্তুত আছে।
এদিকে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন কর্মীদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলে ইরানের হামলার আশঙ্কার মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাস বলেছে, কর্মীদের বৃহত্তর জেরুজালেমের বাইরে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে তেল আবিব ও বির শেভা এলাকা এ সতর্কতার আওতামুক্ত থাকবে।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অভিযানসংক্রান্ত কমান্ডার এরিক কুরিলা নিরাপত্তা হুমকির ব্যাপারে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করতে ইসরায়েল সফরে গেছেন। পেন্টাগন বলেছে, এটি পূর্বনির্ধারিত সফর। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এর তারিখ এগিয়ে আনা হয়েছে।
গত রোববার ইরানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের দূতাবাসগুলো এখন আর নিরাপদ নয়। কোনো একটি কনস্যুলেট ভবনকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বলেছেন, ইসরায়েলি ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালাতে পারে ইরান।