মূলত শক্তি ও অবস্থান জানান দেয়ার জন্যই পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

এ সময় তিনি বলেন, বান্দরবানে হামলার ঘটনায় কারো যদি কোনো গাফিলতি থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো ধরনের অস্ত্রধারী বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না। সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে বাহিনীগুলোর শক্তি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

কেএনএফের সাথে সংলাপ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণের সরকার। জনগণ চাইলে সংলাপ চালিয়ে যেতে আপত্তি নেই।’

শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ সময় তার সাথে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয় সচিব মুস্তাফিজুর রহমান, সচিব আবদুল্লাহ আল মামুনসহ বিজিবি, র‍্যাব ও আনসার বাহিনীর মহাপরিচালকসহ সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মূলত সন্ত্রাসীরা তাদের শক্তি ও অবস্থান জানান দেয়ার জন্যই এ হামলাগুলো চালিয়েছে। সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে সামরিক বাহিনী অভিযানে নামার আগে অন্য বাহিনীগুলো তাদের কর্মকাণ্ডেগুলো চালিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বান্দরবানের রুমা উপজেলা কমপ্লেক্স ও সোনালী ব্যাংক পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র সদস্যরা হামলা চালিয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ও চার শতাধিক গোলাবারুদ লুট করে। অপহরণ করে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে। এর পরের দিনই থানচি বাজারে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে প্রায় ১৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরের দিন রাতে আবারো থানচি বাজারে হামলা চালায় তারা।

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় সন্ত্রাসী হামলা অস্ত্র ও টাকা লুটের পর সেখানে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুনরায় সন্ত্রাসী হামলার ভয় ও আতঙ্কে থানচি উপজেলা সদরে বিভিন্ন এলাকার লোকজন তারা নিরাপদ জায়গায় সরে গেছে।

রুমা রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পাহাড়ি সম্প্রদায়গুলোর বর্ষবরণ বৈশাবি উৎসবের আমেজ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।

এলাকায় সেনাবাহিনী পুলিশ ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থাপনায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। এ দুটি উপজেলায় নিরাপত্তা বাড়াতে জেলা শহর থেকে এপিবিএন ও র‍্যাব সদস্যদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে, রুমায় সোনালী ব্যাংকের লুট করা অস্ত্র উদ্ধারে ও সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান এখনো শুরু হয়নি। তবে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‍্যাব আলাদা আলাদাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে।

পুলিশ সুপার মো: সৈকত শাহীন ও র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিষয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার পর খুব শিগগিরই কম্বিং অপারেশন শুরু হতে পারে।