মহান স্বাধীনতা দিবস আজ। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এই দেশ, তাদের প্রতি আজও শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে। প্রতিবছর এদিনে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে লাখো মানুষের ঢল নামে। শ্রদ্ধায় ভরে গেছে স্মৃতিসৌধের বেদি।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মুক্তিযোদ্ধা ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এসে ভিড় করে।

এদিন সকালে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর শহীদদের স্মরণ করে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের ৫৪ বছর পূর্তির দিনটি কর্মসূচি শুরু করেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদীতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর চৌকস দল রাষ্ট্রীয় কায়দায় সালাম জানান।

এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। পরে কিছু সময় নিরবে দাঁড়িয়ে থেকে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সর্বস্তরের জনগণের জন্য। সারিবদ্ধ ভাবে ফুল নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে লাখো জনতা। মুহূর্তেই জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। তাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে শহীদ বেদি।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যুদ্ধাহত অনেক মুক্তিযোদ্ধাও এসেছেন শ্রদ্ধা জানাতে। তাদের অনেকের হাতে ছিলো লাল-সবুজের বিজয় পতাকা।

ফরিদপুর থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা সাইফুল বলেন, যাদের আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তাদের স্মরণ করতে স্মৃতিসৌধে এসেছি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছি। নয় মাস যুদ্ধের পরে আমরা বিজয়ী হয়েছি। কিন্তু অনেকেই জীবন দিয়েছিল এই স্বাধীনতার জন্য। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের মুখর হয়ে ওঠে স্মৃতিসৌধ প্রাণ।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সকালে জনসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করার পর দলে দলে মানুষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। শ্রদ্ধার ফুলে ধীরে ধীরে বেদি ভরে যাচ্ছে। তবে শ্রদ্ধা নিবেদনে সুবিধার্থে বেদি থেকে ফুল অপসারণ করা হচ্ছে।