রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় কনসার্ট হলে মুখোশ পরা বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। হতাহতের ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
এ ঘটনার পরপর নিজস্ব টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেয়া এক পোস্টে আইএসের পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। যদিও আইএসের ওই পোস্ট যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনাকে ‘রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ মার্চ) মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় বন্দুকধারীরা কনসার্ট হলে ঢুকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা গুলি করার পাশাপাশি বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। এতে ক্রোকাস সিটি হলে আগুন ধরে যায়। ধসে পড়েছে হলের ছাদ।
এদিকে এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি ওয়াশিংটনে ব্রিফিংয়ে বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় ইউক্রেনের বা ইউক্রেনীয়দের সম্পৃক্ততার কোনো আভাস পাওয়া যায়নি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মার্চ রাশিয়ায় মার্কিন দূতাবাস একটি নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করে। সতর্কবার্তায় বলা হয়, মস্কোয় বড় জমায়েতে উগ্রপন্থীদের হামলার পরিকল্পনার খবর জানা গেছে। এ সতর্কবার্তায় বড় জমায়েতের মধ্যে কনসার্টের কথাও বলা হয়েছিল। সতর্কবার্তায় মস্কোয় অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার জন্য বড় জমায়েত এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।
রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পরে পরেই কনসার্ট হলে উপস্থিত দর্শকদের অনেকেই বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তবে বিস্ফোরণের কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় অনেকে ভিতরে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। প্রায় ৭০টি অ্যাম্বুল্যান্স এনে উদ্ধারকাজ শুরু হয়।
মস্কোর কনসার্ট হলে হামলার ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করার সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সে দেশের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত চলা সেই হামলা থেকে বাঁচতে অনেকেই মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন। গুলি চালানো বন্ধ হলে লোকজন সেখান থেকে হামাগুড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এ হামলাকে জঙ্গিহানা বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই এই জঘন্য অপরাধের নিন্দা করা উচিত।”