রাজধানীর মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর; রাত ৭টা। অটোরিকশায় যাচ্ছিলেন ফয়সাল ও রাশেদ নামে দুই বন্ধু। হঠাৎ তাদের রিকশার গতিরোধ করেন ১৫-২০ তরুণ ও যুবক। রিকশা থেকে নামিয়ে ঘিরে ধরে তাদের এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন তারা। তবে ব্যর্থ হন। দেশীয় নানা অস্ত্র দিয়ে নির্দয়ভাবে আঘাত করা হয়। এতে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন রাসেল ও রাশেদ। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। রাশেদের অবস্থা সংকটাপন্ন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাশেদ ও ফয়সাল পল্লবীর কিশোর গ্যাং রাব্বি গ্রুপের সদস্য। আরেক কিশোর গ্যাং সানি গ্রুপের সঙ্গে তাদের দীর্ঘ দিন দ্বন্দ্ব চলছিল। এক সপ্তাহ ধরে দুই গ্রুপ এলাকায় পৃথকভাবে মহড়াও দেয়। সর্বশেষ শনিবার এমন রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে আহত রাশেদ জানান, মিরপুর সাড়ে ১১ এর আধুনিকের মোড়ের কাছাকাছি এলাকায় ১৫-২০ জন তাদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। রাসেলের সঙ্গে ওই এলাকার বাসিন্দা তানজিলা ও তার স্বামী কালুর পূর্ব শত্রুতা ছিল। এছাড়া তানজিলার ভাই শাহিনের সঙ্গেও তাদের বিরোধ ছিল। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা এ হামলা করে।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, আহত রাশেদের অবস্থাও গুরুতর। তাকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর রাসেলের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা এ দুজনকে কুপিয়ে জখম করেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।

এদিকে হাসপাতালে আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, মিরপুর কালশী ই ব্লক ৫ নম্বর লাইনের একটি বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দা তারা। শত্রুতার কারণে তানজিলা কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের ভাড়া করেন।এলাকায় আধিপত্য, মাদক কারবার ও প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে অনেক দিন ধরেই কিশোর গ্যাং গ্রুপ পল্লবীতে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে কোপানোর পর রাতেও দুই গ্রুপ এলাকায় মহড়া দেয়।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। এলাকায় অভিযানও শুরু হয়েছে। কয়েকজনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।