ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে বন্দী তারেকুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে চলছে আহাজারি। সন্তানকে ফিরে পেতে কান্নাকাটি করছেন আল্লাহর কাছে।

বুধবার দুপুরে তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালীর ছকড়িকান্দি গ্রামের বাড়িতে যেয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
বাড়িতে প্রবেশের জন্য দরজার সামনে দাঁড়াতে দেখা গেল তারেকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন নিবিষ্টচিত্তে কুরআন তেলাওয়াত করছেন। সাংবাদিকদের কাছে এ সময় তারা সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য সকলের সহায়তা কামনা করেন। একইসাথে সরকার যাতে ওই জাহাজের সকলকেই জীবিত উদ্ধার করতে পারে সেই আর্তি জানান।

স্থানীয়রা জানান, তারেকুল খু্বই নম্র এবং ভদ্র একটি ছেলে। তার মা জানাল,‘সাত বছর বয়স থেকে কখনো নামাজ-রোজা কামাই করেনি তারেক।’ এমন একটি সোনার ছেলের এমন দুর্দশার খবরে বারবার হুহু করে কেঁদে উঠছেন তার মা। ছেলের ছবি দেখে কান্না করছেন আর তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে বার্তা পৌছে দেয়ার অনুরোধ করছেন।

অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবী মো: দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট মো: তারেকুল ইসলাম।

স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল থেকে পাশ করে চলে যান ঢাকায়। সেখানে মিরপুরের ড. মো: শহীদুল্লাহ্ কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন।

২০১২ সালে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। ২০১৪ সালে নটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরিতে যোগ দেন।

সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন করে যোগ দিয়েছিলেন ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া গোল্ডেন হক নামে বাংলাদেশী জাহাজ পরিচিত এমভি আবদুল্লাহর থার্ড অফিসার হিসেবে।

পণবন্দী ২৩ নাবিকের মধ্যে ফরিদপুরের সন্তান তারেকুলও এখন পণবন্দী হিসেবে জিম্মি। বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড অফিসার তিনি।

২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বরে বিয়ে করেন নাটোরের মেয়ে তৎকালীন মেডিক্যালের ছাত্রী মোসাম্মৎ তানজিয়া। বিবাহিত তারেকুল-তানজিয়া দম্পতির এক বছর এক মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে।

বুধবার দুপুরে ফরিদপুর থেকে মধুখালীতে পৌছে তারেকুলের গ্রামের বাড়ি পৌছে দেখা গেল তারেকুলের গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা। তাদের একটিই আকুতি, যেকোনো মূল্যে তারা তাদের প্রিয় তারেকুলকে ফেরত চান।