সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক গৃহবধূকে (৪০) দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায়ে ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অপর ৬ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ২ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত।
আজ সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ছাড়া ১৫ জন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আজ সকাল ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় আসামিদের জেলা জজ আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার জন্য আগে থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় আদালত এলাকা। আদালতে মামলার বাদী স্বামীসহ হাজির ছিলেন নির্যাতনের শিকার সেই নারী।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই গৃহবধূকে (৪০) মারধর এবং দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে ঘটনাটি ঘটায় তখন দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনায় আসে ঘটনাটি। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী ছিলেন। তার অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনার পরদিন ৩১ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মামলার আসামিরা হলেন- সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্য ব্যাগ্যা গ্রামের মো. সোহেল (৩৮), মো. হানিফ (৩০), স্বপন (৪২), মো. চৌধুরী (২৫), মো. বাদশা আলম বসু (৪০), আবুল হোসেন আবু (৪০), মোশারফ (৩৫), মো. সালাউদ্দিন (৩২), মো. রুহুল আমিন (৪০), মো. জসিম উদ্দিন (৩২), মো. হাসান আলী বুলু (৪৫), মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮), মো. মুরাদ (২৮), মো. জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি (২৮) ও মো. সোহেল (২৮)। আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে ১৬ জানুয়ারি রায়ের তারিখ ধার্য করেন নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস। রায় প্রস্তুত না হওয়ায় সেদিন তারিখ পরিবর্তন করে আজ ৫ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয় এবং রায়ে এই দন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
