চীনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এ নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ভোটার নির্ধারণ করবেন তাইপের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন।
তাইওয়ানের এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোটের ফলাফল চীনের সঙ্গে দ্বীপরাষ্ট্রটির সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে এবং একইসঙ্গে এই পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়াতে পারে ও সারা বিশ্বের অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করতে পারে।
এবারের নির্বাচনে তাইওয়ানের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যোটিক পোগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) সাই ইং ওয়েনের উত্তরসূরী নির্বাচিত হবেন। সাই ২০১৬ ও ২০২০ সালে পরপর দু’বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার মেয়াদ সম্পন্ন করেছেন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইপের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) লাই চিং তে, রক্ষণশীল কোয়োমিনতাং পার্টির (কেএমটি) হো ইয়ু হই ও তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) কো ওয়েন জে।
এবারের নির্বাচনে লাইয়ের সঙ্গে থাকা মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুজন চীনঘেঁষা। জনমত জরিপে লাই কিছুটা এগিয়ে থাকলেও তিনি বিজয়ী হবেন, এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। একসময় তার দল তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পেরেছিল। কিন্তু আট বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও দলটি নতুন কিছুই করতে পারেনি। সেখানে মূল্যস্ফীতি যেভাবে হয়েছে, মানুষের বেতন সেভাবে বাড়েনি। অথচ বাড়িভাড়া বেড়েছে ব্যাপক।
সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৬ সালে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পর থেকে মূলত দুটি রাজনৈতিক দল ডিপিপি ও কেএমটি প্রতি চার বছর পর জয়ী হয়ে আসছে। তবে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও ধীর অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ক্ষমতাসীন দল ডিপিপির প্রতি আস্থা কমেছে তাইপের জনগণের।
তাইওয়ানে প্রতি চার বছর অন্তর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারে না কেউ।
শনিবারের নির্বাচনে প্রায় ১৮ হাজার ভোট কেন্দ্র থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন দেশের জনগণ। ভোটার প্রায় ২ কোটি।
কয়েক মাস ধরেই নির্বাচনকে ঘিরে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। নির্বাচন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ চীনের সঙ্গে দ্বীপটির ভবিষ্যত কী দাঁড়াবে তা এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে।