গাজীপুরে বাজিতে মারবেল খেলাকে কেন্দ্র করে এক কিশোর খুন হয়েছে। ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় সাড়ে ৫মাস পর এক যুবককে গ্রেপ্তার করে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃহষ্পতিবার গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত রাসেল আহম্মেদ সোয়াদ (২১)। সে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন টেকনগপাড়া এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় ভোগড়া বাইপাস এলাকার কাঁচামালের আড়তের এক দোকানের শ্রমিক।
পিবিআই’র পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান জানান, গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার এক বাড়িতে স্ত্রী এবং দুই সন্তান বকুল (১৭) ও বাদলকে (৭) নিয়ে ভাড়া থেকে এলাকায় রিক্সা চালাতেন সাজ্জাদ মিয়া। তার স্ত্রী স্থানীয় এক পোশাক কারখানায় সুইং অপারেটর হিসাবে চাকরি করেন। প্রতিদিনের মতো গত বছরের (২০২৩ সাল) ২৪ জুলাই সকালে দুই সন্তানকে বাসায় রেখে নিজেদের কাজে চলে যান ওই দম্পতি। এরপর সকাল ১০টার দিকে খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাসা হতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় বকুল। বিকেলে সাজ্জাদ মিয়া ও তার স্ত্রী বাসায় ফিরে বকুলকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরদিন সকালে স্থানীয় পেয়ারা বাগান এলাকার বালুর মাঠ সংলগ্ন একটি ডোবা থেকে বকুলের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে বাসন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় থানা পুলিশ নাজমুল ও নাঈমসহ সোয়াদকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত নাজমুল ইতোমধ্যে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও থানা পুলিশ এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই গাজীপুরকে দেওয়া হয়। এরপ্রেক্ষিতে পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জামাল উদ্দিন খান তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সোয়াদকে দুইদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোয়াদ ভিকটিম বকুল হত্যাকান্ডের সঙ্গে অপর হত্যাকারীসহ নিজেকে জড়িয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এরপ্রেক্ষিতে ঘটনার সাড়ে ৫মাস পর চাঞ্চল্যকর কিশোর বকুল হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই ঘটনারদিন দুপুরে বালু মাঠে বাজিতে মারবেল খেলছিল বকুল ও নাঈম। এসময় তাদের মাঝে ঝগড়া ও মারামারি হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয় নাঈম। এ ঘটনার জেরে নাঈম তার এক বন্ধুসহ সোয়াদ ও অটোচালক নাজমুলের সঙ্গে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যার পর বকুলকে অটোরিক্সায় তুলে বালুর মাঠ সংলগ্ন একটি পরিত্যাক্ত টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে বকুলকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে বেধড়ক মারধর করে তারা। রাতে মারধরের একপর্যায়ে বকুলের পা চেপে ধরে সোয়াদ। এসময় নাঈম বকুলের গলা মুখ চেপে ধরলে মারা যায় সে। পরে নিহতের লাশ পার্শ্ববর্তী ডোবায় ফেলে তারা পালিয়ে যায় বলে বলে গ্রেপ্তারকৃত সোয়াদ জানিয়েছে।