বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ৭ জানুয়ারির ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচনে গঠিত জাতীয় সংসদ ‘অবৈধ’।
তিনি বলেছেন, আমরা বলেছি যে, এই নির্বাচনে জনগন অংশ গ্রহণ করেনি। এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, গ্রহণযোগ্য হয়নি। শুধু তাই নয়, জনগণের অংশগ্রহণ বিহীন এই নির্বাচন বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশগুলোও গ্রহণ করে নাই। আমরা মনে করি, এটা অবৈধ সরকারের অবৈধ সংসদ।
বুধবার সকালে জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণের পর বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের এ সদস্য এই মন্তব্য করেন।
এদিন সকাল ১০টায় সংসদ ভবনে শপথ কক্ষে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণ করান।
বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় মতস্যজীবী দলের উদ্যোগে ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের জন্য জনগণকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুকের কাছ থেকে এই প্রতিক্রিয়া আসলো।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ২৯৮ আসনের ফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন, যাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ২২২টিতে। এর বাইরে জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে।
এবার রেকর্ড ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫৯ জনই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। বাকিদের মধ্যে দুজন সরাসরি দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
নবম জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ বলেন, ৭ জানুয়ারি ভোটে জনগণ অংশ গ্রহণ করেনি। অতএব এই সংসদ সদস্যদের শপথও জনগণ গ্রহণ করবে না।
‘ভোট বর্জনে জনগনকে ফুলেল শুভেচ্ছা’
জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রিকসাচালকসহ পথচারীদের হাতে ফুল তুলে দেন বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক। এ সময়ে মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিনি বলেন, অবৈধ নির্বাচন জনগণ বর্জন করেছে। আমরা জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দিচ্ছি … এই ভোটে তারা অংশ গ্রহণ না করার জন্য।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে লজ্জাজনক ঘটনা ৭ জানুয়ারি ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। জনগণের অনুপস্থিতিতে ভোটারবিহীন নির্বাচনে তল্পিবাহক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন।
আমরা তথ্য-উপাত্ত দেখে বাংলাদেশের সব মিডিয়া ও গণমাধ্যমে যেটা দেখেছি সেটা হলো- ২ থেকে ৪ পাসেন্টের বেশি ভোট পড়েনি। সেই ভোটের সংসদ সদস্যদের যে শপথ অনুষ্ঠান আজ হয়েছে, আমরা তা প্রত্যাখান করছি।
‘সরকারকে হুশিয়ারি’
ফারুক বলেন, এই অবৈধ সংসদে যে সরকার গঠিত হবে সেই সরকারকে কখনো জনগন গ্রহন করবে না। আমরা সরকারকে হুশিয়ার করে দিতে চাই, আপনারা একটা ভুয়া ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছেন। এরশাদও ’৮৬ সালে ’৮৮ সালে নির্বাচন করেছিলো সেই নির্বাচন জনগণ অংশগ্রহণ করে নাই।
আপনারা ক্ষমতায় ছিলেন জোর করে, এবার ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে যে নির্বাচন আপনারা করেছেন ভোটারবিহীন, সেই সরকার আপনারা পরিচালনা করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত। বাংলাদেশের মানুষ জেগেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রাজপথে আছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। রাস্তায় ইনশাল্লাহ আমরা আছি, থাকব। গণতন্ত্রের বিজয় অবশ্যই আমরা ছিনিয়ে আনবো।