আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি বিএনপি-জামায়াতকে ধিক্কার জানাই। বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে আর তাদের রাজনীতি মানুষ পোড়ানোর।
আজ শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর বিকেলে বরিশাল নগরীর ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভায় তিনি কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী নতুন ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, যারা নুতুন ভোটার প্রথমবার ভোট দিতে আসবেন, নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার ভোট ব্যর্থ হোক। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি-তরুণ তরুণ সমাজের কাছে আমার প্রত্যাশা এবং ‘আমরা বিশ্বাস করি আপনারা আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।

জনসভায় বরিশাল বিভাগের সব আসনে নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে বলে, দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে। এজন্য আজ বাংলাদেশে এত উন্নয়ন হয়েছে। যখন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশের উন্নতি হয়নি। তাদের সময় বাংলাদেশ পেছনের দিকে চলে গেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এই প্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আমি বাংলাদেশের মানুষের জন্যই কাজ করে যাই। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমি গড়তে চাই। আমার জীবনে যত বাধাই আসুক, একে একে সব অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল। এরপর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সইতে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল ছিল বাংলাদেশের জন্য অন্ধকার যুগ। বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তারা অকাতরে নির্যাতন-অত্যাচার করেছে। তাদের অত্যাচারে টিকতে না পেরে এ অঞ্চলের ২৫ হাজার মানুষ কোটালীপাড়ায় আশ্রয় নিয়েছিল। তারা মানুষের হাত-পা কেটে ফেলতো। চোখ উপড়ে ফেলতো। মেয়েদের উপর পাশবিক নির্যাতন চলাতো। তখন কেউ ঘরে থাকতে পারতো না।
তিনি বলেন, বিএনপির অপশাসনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। কথা দিয়েছিলাম, কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না, সেই কথা রেখেছি। আজকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। দারিদ্র্য বিমোচন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। এসময় শেখ হাসিনা জনসভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, আপনাদের কাছে আহ্বান, আপনারা ৭ জানুয়ারি সবাই সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। এই নৌকায় ভোট দিলে দেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হবে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা জনসভায় বরিশাল বিভাগের প্রার্থীদের পরিচয় দেন এবং তাদের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার সময় সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার প্রশংসা করে বলেন ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে কেন্দ্র করে জেলার পাশাপাশি বরিশাল বিভাগে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভায় মানুষের ঢল নেমেছে। বরিশাল জেলা ও মহানগরসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা পোস্টার-ব্যানারসহ নৌকা মার্কার প্রচারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে নানা রঙের পোশাকে বর্ণিল মিছিল নিয়ে হাজির হন বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।