নাটোরের লালপুরের যুবলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোহা. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্তরা আদালতে হাজির ছিলেন না। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, লালপুর উপজেলার পুকুর পাড়া চিলান এলাকার করিম, মতি সরদার, মকলেছ সরদার, মহসিন, খলিল, রানা, আনিসুর, রাজ্জাক, জার্জিস, কালাম, মিজানুর রহমান, সানা এবং কদিম চিলান গ্রামের আকুল কালাম আজাদ। সাজাপ্রাপ্তরা সকলেই জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে মহসিন নাটোর জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি এবং তার বাবা মকলেছ সরদার কদম চিলান ইউনিয়ন জামায়াতের বর্তমান আমির।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসলাম সরকার জানান, ২০১৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সাজার রায় হয়। এরপরেই ক্ষুব্ধ হয়ে
নাটোরের লালপুর উপজেলার কদম চিলার গ্রামের ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুলের বাড়িতে হামলা চালায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।
এ সময় তারা খায়রুলকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে। বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও পেট্রোল ঢেলে নিহত ও তার চাচা আব্দুল জলিলের বাড়িতে আগুন দেয় এবং বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তাদের বাধা দেওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুল জলিলের স্ত্রী মাজেদা বেগমকেও কুপিয়ে জখম করে তারা।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই শাহীনুর রহমান ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রামণ শেষে প্রায় ১০ বছর পর ১৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন বিচারক। একই সাথে দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার অন্য আসামীদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।রায় ঘোষণার সময় নিহত খাইরুলের স্ত্রী লিপি খাতুন ও তার তিন সন্তান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার সময় লিপি খাতুন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার দুই সন্তান তখন স্কুলে পড়ত।
এ ঘটনা জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাইরুলের স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র খুলে দেন।