৫ জন বিশিষ্ট নারী সমাজে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ পেয়েছেন।
আজ ৯ ডিসেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নারী ও তাদের স্বজনদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদকপ্রাপ্ত ৫ বিশিষ্ট নারীরা হলেন, নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য খালেদা একরাম (মরণোত্তর), নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডা. হালিদা হানুম আখতার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা (মরণোত্তর), নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার ও পল্লী উন্নয়নে রনিতা বালা।
পদকপ্রাপ্তদের ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম স্বর্ণ নির্মিত একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, প্রত্যেককে চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বেগম রোকেয়ার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে; অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি।
বাংলাদেশের মেয়েরা এখন আর পিছিয়ে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আমাদের নারীদের বিচরণ সব জায়গায়। যেমন তারা রাজনীতিতেও আছে, অর্থনীতিতে আছে, পররাষ্ট্রনীতিতে আছে, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ে… সশস্ত্র বাহিনী, সেই সঙ্গে বর্ডার গার্ড সব ক্ষেত্রে কিন্তু নারীদের প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। নারীরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সাংবাদিকতা, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা সব ক্ষেত্রে এখন মেয়েরা তাদের দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে। তিনি বলেন, এশিয়ার শীর্ষে এখন বাংলাদেশের নারীরা, সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে গর্বের বিষয়।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেন্ডার সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ। নারীর রাজনীতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম। আমাদের স্বাস্থ্য সেবাকর্মীদের ৭০ শতাংশ নারী। তৈরি পোশাক শিল্পে ৮০ শতাংশের বেশি নারীকর্মী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশটাকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০৪১ সালের মধ্যে এ বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। নারী-পুরুষ সবাইকে সমানভাবে এগিয়ে নিতে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে নারী-পুরুষ সবাইকে সমানভাবে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের ছেলে-মেয়ে উভয়ই যেন সমানভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারে সে ব্যবস্থা নিয়ে, সব পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অধিকার এবং সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়।