ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রনে রুশ রাস্ট্রীয় পরমাণু কর্পোরেশন রসাটম ‘নেট জিরো পারমাণবিক শিল্প অঙ্গীকার’ এ যুক্ত হয়েছে। পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর নেতৃত্বে গৃহীত এই উদ্যোগে ২০৫০ সাল নাগদ বিশ্বে পরমাণু শক্তি উৎপাদন সক্ষমতা বর্তমানের তুলনায় তিন গুন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এই উদ্যোগে দূষণমুক্ত, লো-কার্বন, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সংকট মোকাবিলায় পারমাণবিক শক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে রোসাটম এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ ২৮) ‘কপ ২৮ এটম ফর নেট জিরোঃ পারমাণবিক শক্তির বিস্তার ত্বরান্বিত করণ’ শীর্ষক ইভেন্টে সকল সরকার, বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংক সমূহ এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রতি এই মর্মে আহ্বান জানানো হয়েছে যেন তারা অন্যান্য দূষণমুক্ত এনার্জীর মতো সমান ভাবে পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রেও জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করেন। পারমাণবিক শিল্পে অর্থায়ন জলবায়ু সংকট নিরসনে সারা বিশ্বে পরমাণু শক্তির উৎপাদন বৃদ্ধিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রসাটমের প্রথম উপ-মহাপরিচালক কিরিল কামারভ এ প্রসঙ্গে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন সংকট মোকাবিলাকে রসাটম গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। ব্যাপক ডিকার্বনাইজেশনের জন্য পারমাণবিক শক্তি একটি পরীক্ষিত, দ্রুত এবং টেকসই সমাধান। নেট জিরো নিউক্লিয়ার ইন্ডাস্ট্রি অঙ্গীকারে যোগদানের মাধ্যমে আমরা ২০৫০ সাল নাগাদ বিভিন্ন সরকার ও স্টেকহোল্ডারের মধ্যে পরমাণু শক্তি উৎপাদন সক্ষমতা তিন গুন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকার ও স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করছি”।

ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক সামা বিলবাও জানান যে, ইতোমধ্যে শতাধীক প্রতিষ্ঠান নেট জিরো নিউক্লিয়ার ইন্ডাষ্ট্রি অঙ্গীকার উদ্যোগকে অনুমোদন দিয়েছে। “সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৫০ সাল নাগাদ কমপক্ষে তিন গুন পরমাণু উৎপাদন সক্ষমতা অর্জনে আমরা সফল হবো”।

নেট জিরো নিউক্লিয়ার ইন্ডাস্ট্রি অঙ্গীকারের উদ্যোগে অংশ গ্রহণকারীরা নেট জিরো লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে ব্যাপক ডিকার্বনাইজেশনে পরমাণু শক্তির ট্র্যাক রেকর্ডের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। রসাটমসহ যেসকল প্রতিষ্ঠান এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ করছে, তারা বর্তমানে চালু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং নিরাপদ, সুরক্ষিত ও দায়িত্বশীল নতুন কেন্দ্র নির্মানে সচেষ্ট হবার অঙ্গীকার করেছে।

অংশগ্রহণকারীরা প্রতি বছর লক্ষ্য অর্জনে তাদের অগ্রগতি পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং একই সঙ্গে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই উদ্যোগে যুক্ত হতে আহ্বান জানিয়েছে যাতে ভবিষ্যতে টেকসই ও লো-কার্বন এনার্জী লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়। রসাটম বর্তমানে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মানে সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। এই প্রকল্পে প্রতিটি ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি পরমাণু বিদ্যুৎ ইউনিট স্থাপিত হচ্ছে। মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ২৪ শ’ মেগাওয়া।