‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) নীতিমালা’ সংশোধন করে মাদ্রাসা শিক্ষায় সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক নিয়োগ পুনরায় সংযুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময়ে কাউসার হাবিবের সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের প্রথম থেকে সপ্তদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২০ সাল পর্যন্ত স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনের সুযোগ পেত এবং অনেকেই এখনো মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে চাকুরিরত আছেন।
কিন্তু ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বরে এমপিও নীতিমালা সংশোধন করে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের নীতিমালা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি ২০২২-এ ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হতে উত্তীর্ণদের প্রাথমিক সুপারিশ করা হলেও চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান করা হয়নি।
মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জুবায়ের আলম বলেন, এ নীতিমালা প্রয়োগ করে আমাদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। ফাজিল-কামিলে যা পড়ানো হয় আমরা তার থেকেও মানসম্মত শিক্ষা অর্জন করি। অথচ এ নীতিমালা প্রণয়ন করে আমাদেরকে সকল প্রকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যে অন্যায্য ও অন্যায়মূলক নীতিমালা জারি করা হয়েছে তা আমরা মানি না। নিঃসন্দেহে এটা বৈষম্যমূলক। অবিলম্বে এ নীতিমালা বাতিল করতে হবে। যদি তা না করা হয় তবে আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দেব।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আ. ন. ম. মাসুদুর রহমান বলেন, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন থেকে ইসলামিক স্টাডিজকে বাদ দিয়ে আমাদের ছাত্রদের সাথে প্রবঞ্চনা করা হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক ও ঘৃণ্য একটি সিদ্ধান্ত। আমরা এ অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে আমরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চাই। নতুবা কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ ) ‘অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২৩’-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরবি ও ফিকহ বিভাগে সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড হতে ফাজিল বা কামিল ডিগ্রি অথবা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মাদ্রাসাসমূহ হতে ফাজিল বা কামিল ডিগ্রি অথবা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় হতে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিষয়ে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে আরবি বিষয়ে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ তথা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উক্ত পদসমূহে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এছাড়াও মানববন্ধন আরো বক্তব্য রাখেন বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম। এসময়ে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এম. শামীম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়