ভেড়ামারা দিগন্ত জুড়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে উঠতি আমন ধানের ক্ষেত। চলতি আমন মৌসুমে পরিমিত পরিমানে বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ফলনে কিছুটা হ্রাস পাওয়ার আশংকা কৃষকের মনে দানা বাধলেও মৌসুমী হাওয়ায় আমন ধানের সুঘ্রাণ মণ কাড়ে সবার। কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের আমন ক্ষেত শোভা পাচ্ছে মাঠ জুড়ে। ধানের শীষে কাঁচা-পাকা সোনা রং লেগেছে। চাষীগণ বুক ভরা আশা নিয়ে ধানের ক্ষেত পরিচর্যা ও দেখা-শুনা করছে প্রতি নিয়ত। পাখিরা কিচির-মিচির গান গাচ্ছে ধানের শীষে বসে আপন মনে প্রকৃতির টানে। তবে ইঁদুরের উৎপাত এতোই বেশী যে কৃষকের মন খুব খারাপ। তবুও কৃষকগণ আশা করছেন আর মাত্র ৫ থেকে ৭ দিনের মাথায় তাদের ঘরে তুলবে সোনালী রংয়ের আমন ধান।আমন ধানের ওপর ভরসা করে কার্তিক ও অগ্রহায়নের অভাব জয়ের স্বপন দেখছে উপজেলার কৃষক ও খেটে খাওয়া দিন মজুর শ্রেণীর মানুষজন।
স্বল্প মেয়াদি আবাদ যোগ্য বিআর-৩৯, বিআর-৪৯, বিআর-৭৫ ধান লাগানো হয়েছে ব্যপক। এ ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট (ব্রি)। অন্য জাতের যে কোন ধান চাষে সময় লাগে ১৪০ থেকে ১৫০ দিন আর ব্রি-৩৯,ব্রি-৪৯, ব্রি-৭৫ জাতের ধান রোপনের পর ১১০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে কাটা সম্ভব বলে জানা গেছে। প্রতি একরে বিআর-৩৯, ৪৯, ৭৫ জাতের ধান উৎপাদন হয় ৬০ থেকে ৭০ মন এবং অন্য জাতের ধান ফলে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ মণ। ফলে বিআর ৩৯, ৪৯, ৭৫ জাতের ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে এ উপজেলার কৃষকগণ। ভেড়ামারা উপজেলার বারবাইল এলাকার চাষী আবদুর রহমান জানান, তার আবাদ যোগ্য ২ একর জমির দেড় একরে বিআর ৩৯ ধান লাগিয়েছেন। উপজেলার হিড়িমদিয়া এলাকার চাষী আসাদুল জানান, তার মোট প্রায় আড়াই একর জমির মধ্যে এক একরে ৪৯ আর দেড় একরে ৭৫ ধান লাগানো হয়েছে। আমরা ধান কাটা শুরু করেছে কয়েকদিন পরে ঘরে উঠবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস এর সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলায় বিভিন্ন মাঠে চলতি আমন মৌসুমে ব্যাপক ধান চাষ করা হয়েছে। একই সময় গতবছর উপজেলায় ধান চাষ করা হয়েছিল এখনকার তুলনায় কম। কৃষকদের সচেতনতার কারণে বিআর-৩৯, ৪৯, ৭৫ জাতের ধানের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মো: মাহমুদুল হাসান চন্দন