আগামী ২৮ অক্টোবর শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এই সমাবেশ করবে বলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) জানিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।

সমাবেশের বিকল্প আরও দুটি ভেন্যুসহ ৭টি তথ্য চেয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল বুধবার মধ্যরাতে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পদক মো. রিয়াজ উদ্দিনের বাসায় চিঠি দিয়ে আসে পুলিশ। বৃহস্পতিবার চিঠির জবাব দিয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন। এতে পুলিশের সাতটি প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে।

পুলিশকে দেওয়া চিঠির জবাবে রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ অক্টোবর শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি (মঞ্চ নির্মাণ ও প্রচার প্রচারণার কার্যক্রম) ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এমতাবস্থায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্য কোনো ভেন্যুতে নতুনভাবে সমাবেশের প্রস্তুতি গ্রহণ করা দুরূহ ব্যাপার।

এর আগে পল্টন থানা থেকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, যদি নিরাপত্তাজনিত কারণে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না যায়, সেজন্য তারা যেন আরও দুটি বিকল্প জায়গার নাম জানায়।

এ ছাড়া আরও ৬টি বিষয়ে জানতে চান পল্টন থানার ওসি। সেগুলো হলো— সমাবেশে লোকসমাগম কখন শুরু হবে এবং কখন শেষ হবে, কী পরিমাণ লোকসমাগম হবে, সমাবেশটি বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে ঠিক কোন কোন স্থান পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, সমাবেশে বক্তব্য প্রচারের জন্য কোন কোন স্থানে মাইক স্থাপন করা হবে, অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেবেন কিনা এবং সমাবেশে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে কিনা এবং হলে তার সংখ্যা কত?

ওসির চিঠির জবাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, সমাবেশে লোকসমাগম সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে এবং সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হবে। সমাবেশে প্রায় ২ লাখ লোকসমাগম হবে। সমাবেশটি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট থেকে পল্টন মোড়, জিপিও মোড়, শিক্ষা ভবন, গোলাপ শাহ মাজার, নগর ভবন, নবাবপুর সড়ক, মহানগর নাট্যমঞ্চ সড়ক, দৈনিক বাংলা মোড় এবং মতিঝিল সড়ক, স্টেডিয়াম সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। সমাবেশে বক্তব্য প্রচারের জন্য উল্লিখিত স্থানগুলোতে মাইক স্থাপন করা হবে। সমাবেশে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী-সমর্থক, নারী সংগঠন, তরুণ প্রজন্ম ও সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করবে। সমাবেশে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।

এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের অনুষ্ঠানস্থল ও তার সংলগ্ন এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের জন্য চিঠিতে পুলিশের কাছে বিনীত অনুরোধ জানানো হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

প্রসঙ্গত, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ১৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক জনসমাবেশে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পালটা শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে নয়াপল্টন থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে। দুদলের একই দিনে বড় সমাবেশ ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।