গাজীপুরে অটোরিকশা চালক দুইভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতদের বাবা মোঃ আবুল কাশেম। শনিবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। এ জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত কাউকে ঘটনার পরদিন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ও প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ওই থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম।

মামলাসূত্রে জানাগেছে, গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন ভুরুলিয়া এলাকার আব্দুল রশিদের বাড়িতে স্বপরিবারে ভাড়া বাসায় থাকেন আবুল কাশেম। একই বাড়িতে শফিকুল ইসলাম ও শুক্কুর আলীসহ তার ছেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন। তার ছেলে এলাকায় অটোরিকশা চালান। শুক্রবার দিনভর মাছ শিকার করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরেন শফিকুল ইসলাম ও শুক্কুর আলী। পরে জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করতে বন্ধু রুবেলের সঙ্গে তার অটোরিকশায় চড়ে বাঙ্গালগাছ এলাকার বাঁশপট্টি তিন রাস্তার মোড়ে আসেন দুইভাই শফিকুল ও শুক্কুর আলী। সেখানে পৌছলে পূর্ব শত্রুতার জেরে অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ওই দুই ভাইকে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন- ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার মহেষকুড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩২) ও শুক্কুর আলী (৩০)।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে মহানগরীর সদর থানাধীন বাঙ্গালগাছ বাশপট্টি এলাকায় এলোপাতাড়ি পিটুনি ও ধারালো অস্ত্রের কোপে নিহত হন ওই দুইভাই শফিকুল ইসলাম ও শুক্কুর আলী। ঘটনার সময় তারা অটোরিকশা যোগে এসে স্থানীয় একযুবককে লাঠি দিয়ে আঘাত করে শুক্কুর আলী। এরজেরে ছিনতাইকারী সন্দেহে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে তাদের আটক করে গণপিটুনি দিলে নিহত হন তারা।

জিএমপি’র সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, দুইভাইকে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামী করে নিহতদের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় নি। তবে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে পুলিশের তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহতদের বন্ধু রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে আরো জানান, নিহতদের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসীর অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তাদের হামলায় বাঙ্গালগাছ এলাকার শওকত নামের এক ব্যবসায়ী আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার সময় তারা লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে দোকান ভাংচুর ও ত্রাস সৃষ্টি করে। শফিকুল ইসলাম একটি মামলায় গ্রেপ্তারের পর ২২দিন জেল খেটে সপ্তাহ খানেক আগে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছিল। এ জোড়া খুনের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে।