খালেদা জিয়া কেমন আছেন? জিজ্ঞাসু সুরে এই প্রশ্ন এখন কান পাতলেই শোনা যায়। পরিচিত কারো সঙ্গে দেখা হলেই একে অপরের কাছে জানতে চান হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়া কেমন আছেন? তার অবস্থার উন্নতি কিছু হয়েছে কী। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অগ্রগতি কতদূর? নির্বাচন ইস্যুতে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কার্যকর’ তোলপাড় করা খবরের মধ্যেই বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে উদ্বিগ্নতার সুর সর্বত্রই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অতি দ্রুত বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। এ ব্যাপারে বিলম্ব বা গড়িমসির কোনো অবকাশ নেই। অথচ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইনের নানা মারপ্যাঁচে বিদেশে নেয়ার সুযোগ নেই বক্তব্য দিচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশে এর আগে অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার নজির রয়েছে। কয়েক মাস আগেও বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার জন্য সরকারদলীয় এমপি হাজি মোহাম্মদ সেলিমকে সুযোগ দেয়া হয়। তিনি বিদেশে চিকিৎসা করে দেশে ফিরে এসেছেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং দু’বারের বিরোধীদলীয় নেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে ‘মেঠো রাজনীতি’ কারো কাম্য নয়। সর্বত্রই দাবি উঠেছে বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ম্যাডামের অবস্থা অবনতিশীল। যে কোনো সময় কোনো কিছু ঘটে যেতে পারে। মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা কি জানিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা উদ্বিগ্ন। সবসময় তারা জানতে চাইছেন বাইরে (চিকিৎসার জন্য বিদেশ) নেয়ার কি করলেন?

দীর্ঘ দেড় মাস ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তবে এতদিন ধরে চিকিৎসা গ্রহণের পরও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। বরং তা ক্রমান্বয়ে অবনতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক এবং বিএনপি নেতারা। আগে থেকে চিকিৎসকরা যা বলে আসছিলেন বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন যা দেশে নেই, এ জন্য তাকে বিদেশে নিতে হবে। প্রতিনিয়তই এই একই কথা বলছেন তারা। নিজেদের উদ্বেগ ও অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং বিএনপি নেতাদেরও কাছে তাকে বিদেশে নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসা দিতে না পারলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। বিএনপি নেতারাও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান, হুঁশিয়ারি ও আল্টিমেটাম দিয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন ভাই শামীম ইস্কান্দার। কিন্তু আইনমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনগতভাবে সরকারের কিছুই করার নেই। কারণ এর আগে বেগম জিয়ার সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়ে মুক্ত করা হয়েছিল তখন সেটি ছিল শর্তযুক্ত। শর্তের পরিবর্তন হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি বাতিল করে সহাবস্থানে আনতে হবে, পরে আবার অন্য বিবেচনা করা যাবে। এই অবস্থায় আবার বিএনপির পক্ষ থেকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিতে সরকারকে গত রোববার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া কিডনি, ফুসফুস, হৃদরোগ, লিভার জটিলতায় ভুগছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। লিভার সিরোসিসের কারণে শরীরে পানি জমে যাচ্ছে। এগুলো দু-এক দিন পরপরই বের করতে হচ্ছে। আর ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স (দেহে খনিজের অসমতা) হওয়ায় শরীরে দুর্বলতা রয়েছে। এগুলোর উন্নতির চেষ্টা চলছে। স্যুপ ও তরল জাতীয় কিছু ছাড়া তিনি তেমন কিছু খেতে পারছেন না। হাসপাতালের বিছানায় সারাক্ষণ থাকতে হচ্ছে ইনজেকশন ও স্যালাইনের ওপর। একা একা বিছানা থেকে নামতে পারছেন না, পারছেন না হাঁটা-চলা করতে। এমনকি কারো সাহায্য ছাড়া বাথরুমেও যেতে পারেন না। হাসপাতালে বেগম জিয়ার সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকছেন ছোট ছেলের স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী।

মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে। প্রতিদিনই কিছু টেস্ট করা হচ্ছে। এগুলোর ফলাফল দেখে ওষুধে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ফলাফল আশানুরূপ নয়। দু-একদিন ভালো থাকার পর হঠাৎ অবনতি হচ্ছে।

বোর্ডের এক সদস্য বলেন, এখন লিভার প্রতিস্থাপন ছাড়া দেশে কোনো চিকিৎসা নেই। উনার যেহেতু নানা জটিলতা তাই মাল্টিপুল ডিসিপ্ল্যানারি সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া জরুরি। লিভার সিরোসিসের কারণে শরীরে পানি জমে যাচ্ছে। এগুলো দু-একদিন পরপর বের করা হচ্ছে। দেশে যতটুকু সম্ভব তার সর্বোচ্চ দেওয়া হচ্ছে। আর ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স (দেহে খনিজ অসমতা) হওয়ায় শরীরে দুর্বলতা রয়েছে। এগুলোর উন্নতির চেষ্টা চলছে। স্যুপ ও তরল জাতীয় কিছু ছাড়া তিনি তেমন কিছু খেতে পারছেন না। হাসপাতালের বিছানায় সারাক্ষণ থাকতে হচ্ছে ইনজেকশন ও স্যালাইনের ওপর।

গৃহবধূ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে দেশনেত্রী খেতাব পাওয়া বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও দুইবারের বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফ্যানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। সে সময় থেকেই তার নানাবিধ অসুস্থতা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার সময় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত হন। এরপর তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকেই চিকিৎসা গ্রহণ করছিলেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক যে অবস্থা তাকে বিদেশে নিয়ে অ্যাডভান্স মাল্টি ডিসিপ্লিনারি সেন্টারে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা প্রয়োজন। বাংলাদেশের হাসপাতালে সেই চিকিৎসাটা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরিবার ও দল থেকে তাকে বিদেশে নেয়ার জন্য অসংখ্যবার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু আইনের বাধবাধকতার কথা জানিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা তা বরাবরই নাকচ করে দিচ্ছেন।

এরই মধ্যে গত ৯ আগস্ট রাতে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থা বেশ কয়েকবার অবনতি হলে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

গতকাল সোমবার বিকেলে বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে দেখতে যান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রুহুল কবির রিজভী জানান, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা অবনতিশীল। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও এখানে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, তাঁর অবস্থা এতটাই সংকটাপন্ন যে, জরুরি ভিত্তিতে তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। রিজভী বলেন, তিনি একজন মহিলা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রের সিনিয়র নাগরিক। কোনো টালবাহানা না করে ওজর-আপত্তি না করে তাঁকে বাঁচাতে এ মুহূর্তে ব্যবস্থা নিন। তা না হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। এ সময় রিজভী আহমেদ বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক বলেন, আইনমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের কিছু করার নেই। তাহলে এর আগে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, হাজী সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম যে বিদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন কোন প্রক্রিয়ায়?

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছেন তাঁর ভাই শামীম ইস্কান্দার। গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর ওই আবেদন করা হয়। আবেদনের কপি গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের দিয়েছেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়াকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সপ্তমবারের মতো দুই শর্তে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁর মুক্তির মেয়াদ ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং তাঁকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ৫৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ওই বছরের ১৯ জুন হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। কিন্তু পুনরায় তাঁর স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হওয়ায় ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ৮০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরে আসেন। পরবর্তীতে আরো সাতবার তাঁকে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে হয়।

আবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমানে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বাসায় অবস্থান করলেও অধিকতর উন্নত চিকিৎসার অভাবে এবং কোভিড-পরবর্তী বিরূপ প্রভাবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি। উপরন্তু দিনের পর দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। উদ্বেগের বিষয়, ইতোমধ্যে তিনি ‘লিভার সিরোসিস’ এবং ‘হৃদ্রোগে’ আক্রান্ত হয়েছেন। যার আধুনিক চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। তিনি পূর্বের মতোই উঠে দাঁড়াতে পারেন না, এমনকি কারো সাহায্য ছাড়া ওয়াশরুম কিংবা শয়নকক্ষের বাইরেও যেতে পারেন না।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেগম জিয়ার জীবন রক্ষার্থে ও তাঁর শারীরিক সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে উন্নতমানের ফিজিওথেরাপিসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দেশের বাইরে চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। এমতাবস্থায়, সব শর্ত শিথিলপূর্বক তাঁকে স্থায়ীভাবে মুক্তি এবং বিদেশ গমনের অনুমতি প্রদানের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি মহাসচিবের দেয়া ৪৮ ঘণ্টা আল্টিমেটামের মধ্যে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠালে তার কিছু হলে পরিণতি শুভ হবে না। তিনি বলেন, দেশনেত্রীর যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনাদের কারো অস্তিত্ব বাংলাদেশে আমরা রাখব না।

মির্জা আব্বাস বলেন, আসলে উনাকে (খালেদা জিয়া) গ্রেফতার করে অসুস্থ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে এটাই ছিল তাদের প্ল্যান। সেই প্ল্যান এখন কার্যকর করছে। তিনি বলেন, একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পৃথিবীর কোনো আইন-টাইন কাজে লাগে না। যখন জীবন বাঁচানোর প্রয়োজন হয় তখন তার জন্য যে চিকিৎসা দরকার যেখানে চিকিৎসা দরকার যেটা করা দরকার এটা হলো মানবিক আইন।

কারাবন্দি নেতাদের বিদেশে পাঠানোর অতীত উদাহরণ তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের সময়ে আ স ম আবদুর রবকে জার্মান পাঠানো হয়েছিল। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময়ে আজকের যে বেঈমান একটা আছেন রাশেদ খান মেনন, তাকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন, তার লিভার টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল, তাকে সুস্থ করেছিলেন। আজকে সে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে।

তিনি বলেন, হাজি সেলিম সে ব্যাংকক গেল, চিকিৎসা করে ফেরত এলো সে বাইরে আছে, ম খা আলমগীর (মহিউদ্দিন খান আলমগীর) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বাইরে ঘোরাফেরা করছেন, মায়া (মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বাইরে ঘোরাফেরা করছে। অথচ আমার নেত্রী কিছুই অপরাধ করেননি, তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ম্যাডাম অত্যন্ত অসুস্থ। যে নেত্রী সবসময় অত্যন্ত শক্ত মনে জোর নিয়ে সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠেন, যিনি পাঁচ বছর বন্দি থাকার সময়ও কোনো দিন তাঁর চোখে পানি দেখিনি, তাঁকে অত্যন্ত অসুস্থ দেখেছি।

তিনি বলেন, শনিবার আমি তাঁকে (খালেদা জিয়া) দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বলেছেন যে আপনাদের (বিএনপি) যদি কিছু করার থাকে, করেন। দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। খালেদা জিয়া এত অসুস্থ, অবিলম্বে যদি বিদেশে তাঁর চিকিৎসা না দেওয়া হয়, তাহলে তাঁকে বাঁচানো দুষ্কর হয়ে যাবে।