সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৪ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় এই সংলাপে নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হবে। ওই আলোচনায় ১২ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সিনিয়র সাংবাদিকও রয়েছেন। তবে এ তালিকায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন আয়োজনকারী কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ এবং কেএম নুরুল হুদার নাম নেই।

সংলাপ আয়োজনের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। তিনি জানান, বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি রোধে প্রার্থীর পক্ষে পোলিং এজেন্টের ভূমিকা কী হতে পারে; পোলিং এজেন্ট তার প্রার্থীর পক্ষে আইন ও বিধি অনুযায়ী কীভাবে দায়িত্ব পালন করে পোলিংকে স্বচ্ছতার রূপ দিয়ে নির্বাচন কীভাবে প্রভাবমুক্ত রাখতে পারেন; নির্বাচনের ফলাফলে জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটিয়ে কীভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করিয়ে আনতে পারেন; প্রার্থী কী ধরনের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করবেন এবং কীভাবে তাকে দায়বদ্ধ করবেন।

মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ভোট ভালো হলো কি খারাপ হলো এই দায়ভারটা নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তায়। কিন্তু আসলে কি তাই? নির্বাচন হচ্ছে একটা টিমওয়ার্ক। যে টিমের মধ্যে অনেকেই আছেন। তার মধ্যে রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, ভোটার, পোলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার আছেন। নির্বাচনে সবারই একটা দায়িত্ব থাকে। তিনি বলেন, প্রার্থীর প্রতিনিধি হিসাবে একজন পোলিং এজেন্ট থাকেন। পোলিং এজেন্ট যদি সেখানে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে কি সেখানে কোনো অনিয়ম হতে পারে? পোলিং অফিসাররা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে কিন্তু কেউ অনিয়ম করতে সাহস পায় না। এ রকম সবাই যদি সহযোগিতা করে তাহলে কিন্তু একটি অবাধ, স্বচ্ছ নির্বাচন করা সম্ভব।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা সংলাপ থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি এবং ইমপ্লিমেন্ট করেছি। অভিযোগ করা হয়, আগে যে সংলাপগুলো করেছিলাম, সেই সংলাপের এক পারসেন্টও নাকি বাস্তবায়ন করিনি। আমি বলতে পারি, ৬০ পার্সেন্টের বেশি আমরা বাস্তবায়ন করেছি।

জানা গেছে, সংলাপে আলোচক হিসাবে ১২ জনকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তারা হলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামছুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ ও বেগম কবিতা খানম। ইসির সাবেক তিনজন কর্মকর্তা জেসমিন টুলী, মো. নুরুজ্জামান তালুকদার ও খোন্দকার মিজানুর রহমান। গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, গ্লোবাল টিভির সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও একুশে টেলিভিশনের সিইও পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম শামীম রেজা আলোচক হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর সুধীজনদের নিয়ে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করেছিল ইসি।