বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার চুরি করে দেশকে ফোকলা বানিয়েছে। তারা টাকা চুরি করে বিদেশে পাঠায়, আবার ভোটের সময় ভোট চুরি করে। তাই এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।’ রোববার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া সদরে এরুলিয়ে হাট চত্বরে তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আয়োজনে রাজশাহী বিভাগের ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ বগুড়া থেকে শুরু হয়েছে। প্রতিবেশী জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার নেতাকর্মীরা এই রোডমার্চে বগুড়া থেকে যোগ দেন। আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহী গিয়ে এই রোডমার্চ শেষ হওয়ার কথা।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আবারও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে কেন? মানুষের ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপির এই আন্দোলন। অবৈধ সরকার বলেছিল ১০ টাকার চাল খাওয়াবে। চালের দাম এখন কত? আমার মা-বোনেরা সন্তানদের একটি ডিম খাওয়াতে পারে না। বছরে তিন থেকে চারবার বিদুৎ ও তেলের দাম বাড়ে। সরকার বাজার সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে বলে ফিক্সড করে দিলাম! ফিক্সড করলে কি দাম কমে যায়? এই সরকার শুধু দ্রব্যমূল্যর দাম কমাতেই নয় রাষ্ট্র পরিচালনাতেও ব্যর্থ।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘সরকার নিজেদের গদি বাঁচাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেল দিয়েছে। উনি এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। দেশের ৪০ লাখ মানুষ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। সাঈদী সাহেবকে যেভাবে জেলে ঢুকিয়ে মেরে ফেলেছে, দেশনেত্রীকে নিয়েও একই উদ্দেশ্যে করছে তারা। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অবৈধ সরকারে পতন ঘটিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফেরানো হবে।’

রোডমার্চের আগে সংক্ষিপ্ত পথসভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। এতে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভাপতি আমির খসরু মাহামুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এম এম জিলানী। পথসভার সঞ্চালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

এর আগে সকাল ৯টা থেকেই বগুড়াসহ জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার নেতাকর্মীরা পথসভা স্থলে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হতে থাকেন। সভা শেষে সেখান থেকে মোটরসাইকেল, বাস ও ট্রাকসহ হাজারো যানবাহন নিয়ে বিএনপির তারুণ্যের রোডমার্চ নওগাঁমুখী হয়ে রাজশাহী দিকে রওনা দেয়। এই সময় বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়।