ঢাকা জজ কোর্ট এলাকায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, দলটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ ৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: শাহাবুদ্দিন হাওলাদার এ মামলা করেন।

কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শাহিনুর ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী মো: ওমর ফারুক ফারুকী, আব্দুল খালেক মিলন, খোরশেদ আলম মিয়া, কামরুল ইসলাম সজল, মাহবুবুর রহমান খান, জহুরুল ইসলাম মুকুল, মোহাম্মদ আলী, দেওয়ান রিপন, মো: মহাসিন, মুজাহিদুল ইসলাম সায়েম, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, শাম্মী আক্তার, মোসা: হিরা, নারগিস পারভেজ মুক্তি, নুরুল ইমান বাবুল, ইউসুফ সরকার, আজাহারুদ্দিন রিপন, কে এম মিরাজ হোসেন, সাইদুর রহমান সোহাগ, কে এম বরকত সবুজ, মাহবুব আলম আক্তার, কাজী পনির, এস এম হুমায়ুন কবির, তাহমিনা আক্তার হাসমি, হাফিজুর রহমান হাফিজ, তহিদুর রহমান তৌহিদ, আব্দুল হান্নান, শফিকুল ইসলাম শফিক, মোসা: খুকি, অ্যাডভোকেট যাদু, নুরুজ্জামান, জাবেদ, আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহীম স্বপন, সাঈদ আবু জাফর রিজভী, আল ফয়সাল সিদ্দিক, এমডি কাইয়ুম, দেলোয়ার জাহান রুমি, এ আর রায়হান, আমির, আব্দুর রশিদ, নুরুজ্জামান তপন, মাজিদুর রহমান মাজেন, তানভীর সোহেল, রওসন দিল আফরোজ, সেলিম চৌধুরী, শাহাদা হোসেন আদিল, আব্দুল বাছেদ রাখি, শেখ আলাউদ্দিন, অ্যাডভোকেট রফিক (সাবেক লাইব্রেরিয়ান), অ্যাডভোকেট ইলিয়াছ, আফজাল মৃধা, অ্যাডভোকেট টিপু সুলতান, আশরাফ জালাল খান মনন, অ্যাডভোকেট শিপন, অ্যাডভোকেট লুৎফর, লতিফ ভূঁইয়া, মাহাবুব উদ্দিন, অ্যাডভোকেট পাপ্পু, অ্যাডভোকেট রাহাত, রাসেল আহম্মেদ, ফরিদ উদ্দিন ও শহিদুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট নামে ব্যানার এবং সরকার-বিরোধী বিভিন্ন ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে উল্লেখিত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের-সমর্থিত আরো অনেক আইনজীবী তাদের নির্ধারিত কর্মসূচি পদযাত্রা সফল করার লক্ষ্যে জড় হয়ে সরকার-বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মো: ওমর ফারুক ফারুকীদের নেতৃত্বে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট ব্যানারসহ আইনজীবীরা মিছিল করতে করতে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবন হইতে জনসন রোডস্থ ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনে প্রবেশ মুখে প্রধান সড়কের ওপর চলে আসেন। তখন কোতয়ালী থানা পুলিশ মিছিলকারী আইনজীবীদের রাস্তা অবরোধ না করার জন্য অনুরোধ করেন। আইনজীবীদের অনুরোধ করা শর্তেও তারা পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রধান সড়কে এসে রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।

মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে বলে ‘এলাকাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রয়েছে। এছাড়া সাধারণ বিচারপ্রার্থী লোকজনও যাওয়া-আসা করে থাকেন, আপনারা রাস্তা ছেড়ে দিন।’ তখন মিছিলকারী আইনজীবীরা হট্টগোল সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডের লাঠি দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের পিটিয়ে আহত করেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে এবং যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রাখাসহ আদালত প্রাঙ্গণ এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে মিছিলকারী আইনজীবীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ ঘটনায় মিছিলকারী আইনজীবীদের নিক্ষিপ্ত ইটপাটকেল ও প্ল্যাকার্ডের লাঠির আঘাতে কোতোয়ালি জোনের এডিসি মুহিত কবির সেরনিয়াবাত, কোতোয়ালি থানার এসি শাহিনুর ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর রহমান, ওসি অপারেশন নাজমুল হক, এএসআই বসির ও কনস্টেবল রুহুল আমিন, আনসার সদস্য সুমন আলী আহত হন।