ম্যাচপূর্বক সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, জয় দিয়েই আসর শুরু করতে চান তিনি। তবে তার ইচ্ছে পূরন হলো না, বড় পরাজয় সঙ্গী করেই এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) পাল্লাকেল্লেতে লঙ্কানদের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে টাইগাররা। বাংলাদেশের দেয়া ১৬৫ রানের লক্ষ্য ১১ ওভার হাতে রেখেই ছুঁয়েছে স্বাগতিকরা।

১৬৫ রানের ছোট লক্ষ্য, তবুও কেঁপে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা। কাঁপিয়ে দেন তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। এই দুই পেসারের তোপের মুখে তারা; ১৫ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় শ্রীলঙ্কা। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে মাত্র ১৩ রানে ভাঙেন লঙ্কানদের উদ্বোধনী জুটি। ৩ বলে ১ রানে ফেরান দিমুথ করুনারত্নেকে।

পরের ওভারেই শরিফুলের আঘাত। মুশফিকের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরান পাথুম নিশানকাকেও। ১৩ বলে ১৪ করেন নিশানকা। আর ১০ম ওভারে এসে ২১ বলে ৫ রান করা কুশল মেন্ডিসকে ফেরান সাকিব আল হাসান। স্ট্যাম্প ভেঙে দেন তার। ৪৩ রানেই ৩ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।

শুরুর দিকে এমন দ্রুত কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়ে খানিকটা সম্ভাবনা তৈরি করেছিল টাইগার বোলাররা। তবে সময়ের সাথে সাথে সেই সম্ভাবনা দূর হয়েছে। স্বাগতিকরা চাপ ছেড়ে বের হয়ে এসেছে। সেখান থেকে দলকে বের করে নিয়ে আসেন সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন এই দু’জনে। তাদের ওপর ভর করেই লঙ্কানরা আর কোনো উইকেট না হারিয়েই তিন অঙ্কের ঘর স্পর্শ করে। ফিফটি তুলে নেন সামারাবিক্রমা৷ তবে তাকে ফিরিয়েই এই জুটি ভাঙেন শেখ মেহেদী। ৭৮ রানের জুটি ভেঙে সামারাবিক্রমা ফেরেন ৫৪ রান করে।

এরপর অবশ্য ফের আঘাত আনেন সাকিব, ৩১তম ওভারে এসে ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে। তবে দাসুন শানাকাকে নিয়ে বাকি পথটা স্বাচ্ছন্দ্যে পাড়ি দেন আসালাঙ্কা। নিজেও তুলে নেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত দলের জয় তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন ৬২ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে ২৯ রানে ২ উইকেট নেন সাকিব।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। পুরো পঞ্চাশ ওভারও খেলতে পারেনি টাইগাররা। ৪২.৪ ওভারে ১৬৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। দলের বাকি সবার আসা-যাওয়ার মিছিলে দাঁড়িয়ে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত। বাকি আর কেউ দাঁড়াতে পারেনি এদিন। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেন তাওহীদ হৃদয়।

শান্ত যখন মাঠে আসেন, ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার তখন। ০ রানে ফিরেছেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে প্রথমবার মাঠে নেমে অভিষেকটা স্মরণীয় করতে পারেননি তিনি। আশা জাগিয়েছিলেন নাইম শেখ। তবে ১৬ রানেই শেষ হয় তার দৌঁড়। আনন্দের খবর হলো এই ১৬ রানই তার ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।

২৫ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হাল ধরতে পারেনি সাকিব আল হাসানও। যখন তার দিকে সবাই তাকিয়ে অধিনায়কোচিত একটা ইনিংসের অপেক্ষায়, যেই মুহূর্তে তার দায়িত্ব তুলে নেয়া সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল, তখনই ফিরেছেন সাকিব। ১১ বলে ৫ রান আসে তার ব্যাটে।

চার বাঁ-হাতি ব্যাটারের পর পাঁচ নাম্বারে প্রথম ডান হাতি ব্যাটার হিসেবে মাঠে আসেন তাওহীদ হৃদয়। শান্তকে বেশ ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন তিনি। পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটিও হয় তাদের মাঝে৷ তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি হৃদয়, ৪১ বল খেলে ২০ রানে ফেরেন তিনি।

নামের সুবিচার করতে পারেনি মুশফিকুর রহিমও। দলের বিপদ বাড়িয়ে ফিরেছেন, ফিরেছেন ২২ বলে মোটে ১৩ রান করে। যে ভরসা করে সাত নাম্বারে জায়গা দেয়া হয়েছিল মিরাজকে, তা রাখতে পারেননি তিনি। রান আউটের ফাঁদে পড়ে ফিরেন ১১ বলে ৫ রান করে। ১৪১ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

আর ১৬২ রানের মাথায় ৬ রান করে আউট হন শেখ মেহেদী। এরপর আর ২ রান যোগ হতেই শেষ তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই সময় ফিরেন শান্তও। শতকের সম্ভাবনা জাগিয়েও তিনি থামেন ১২২ বলে ৮৯ রান করে। লঙ্কানদের হয়ে পাথিরানা নেন ৪ উইকেট।