বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমরা যুগে যুগে শুধু মার খাব না। এ জন্য দেশ স্বাধীন করিনি। কেউ আঘাত করলে পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো প্রাণহানি চাই না। শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের পদত্যাগ চাই। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত এ সরকারের পতনের জন্য মাঠে থাকব। জনগণের স্বপ্নপূরণের জন্যই মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম।’

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা: জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মো: আব্দুস সালাম, আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন।

এ ছাড়াও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপু, আসাদুল করিম শাহিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মৎস্যজীবী দলের মো: আব্দুর রহিম, ওলামা দলের শাহ মো: নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন আনন্দের হলেও আমি আনন্দিত নই। কারণ যাকে ঘিরে আমাদের সব, সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে অনুপস্থিত। আজকে খালেদা জিয়াকে বন্দী করে বলছেন- কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? সেটা বিষয় নয়। বিষয় হলো- তাকে মুক্তি দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি বিদায় বেলায় বললেন- বিচার বিভাগ যেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকে। তাহলে আপনি কি বলতে পারবেন যে খালেদা জিয়া কোন আইনে জামিন পেলেন না? আপনি তো দায়িত্বে ছিলেন।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মুক্তবাজার অর্থনীতি সূচনা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। যার কারণে এত লুটতরাজ, দুর্নীতি ও টাকা পাচারের পরও কিন্তু বাংলাদেশ টিকে আছে। বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করেছেন জিয়াউর রহমান। তার ওপর নির্ভর করেই পরবর্তী সময়ে বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এশিয়ার ইমার্জিং টাইগারে পরিণত করেছেন তিনি। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর গণতন্ত্র হত্যা, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেয়া, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার যে বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই বাংলাদেশে আমরা বসবাস করছি। পক্ষান্তরে আমাদের নেতা তারেক রহমান সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে। তিনি এখন স্টেটসম্যান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘সদ্য বিদায়ী প্রধান বিচারপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে বিচার বিভাগের কি অবস্থান সেটা ফুটে উঠেছে। অর্থাৎ তার বক্তব্য একটা কঠিন বার্তা। সেটা বিশ্ববাসী ও বাংলাদেশের মানুষের জন্য। সরকার গুম, খুনের হোতা। তারা দুর্নীতিবাজ। যে কারণে ব্রিকসের সদস্য হতে পারেনি। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হচ্ছে। আজকে সরকার পরাজিত হয়েছে। তারা সব জায়গায় প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। শুধু ব্রিকস নয়, বিশ্বের কোথাও তাদের জায়গা হবে না। আজকে প্রত্যেক দিন বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণতন্ত্র, অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুতরাং দেয়ালের লিখন পড়ুন। জনগণের মনের ভাষা বুঝে বিদায় নিন। দেশটাকে মুক্ত করুন। বাকি ব্যবস্থা দেশের মানুষ নেবে। কারণ সংবিধান মোতাবেক দেশের মালিক তো জনগণ। আমরাও সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন চাই। সেটা হতে হবে মানুষের ইচ্ছার ভিত্তিতে। কিন্তু সরকার যা করছে তা তো মানুষের ইচ্ছার সাথে যায় না।’

সভায় বিভিন্ন সঙ্গীত পরিবেশনা করেন জাসাসের শিল্পীরা।