অন্য যেকোনো বছরের চাইতে ভয়াবহ রূপ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। সরকারী হাসপাতালসহ দেশের প্রায় সব হাসপাতালেই দেয়া হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা। ডেঙ্গুর পরীক্ষা, শনাক্তকরণ, চিকিৎসাসহ বছরের জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত সরকারের প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এক্ষেত্রে রোগী প্রতি ব্যায় হয়েছে ৫০ হাজার টাকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৭০ শতাংশ রোগীই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর বাকি ৩০ শতাংশ রোগী বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছে। আর এ চিকিৎসা দিতেই সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে এই টাকা।
রবিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ১২ হাজার ১৮৪ জন, তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৪১১ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৫৩৭ জনের। এছাড়া এখনো হাসপাতালে ভর্তি ৮ হাজার ২৩৬ জন।
এসময় ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু নারীদের হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বছর নারীরা আক্রান্ত কম হলেও মারা যাচ্ছেন বেশি। পুরুষের প্রায় দ্বিগুণ নারী মারা গেছেন। তারা চিকিৎসা নিতে বিলম্ব করছেন বলেই তাদের মৃত্যু বেশি হচ্ছে। দেশের মোট হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে পুরুষ রোগী ৬৫ শতাংশ। ডেঙ্গুতে মৃত্যু রোগীর ৬৫ শতাংশ নারী আর ৩৫ শতাংশ পুরুষ। জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকায় অর্ধেক বাইরে বাকি রোগী। ঢাকায় রোগী নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অর্ধেক রোগ কমাতে পারব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার করোনার মতো ডেঙ্গু চিকিৎসাও বিনামূল্যে দিচ্ছে। ডেঙ্গু চিকিৎসায় খরচ দুই ধরনের হয়। যাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা বা প্লাটিলেট নিতে হচ্ছে তাদের চিকিৎসা ব্যয় এবং যাদের লাগছে না তাদের খরচ ভিন্ন। এর চিকিৎসায় সরকারিভাবে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। রোগীপ্রতি সরকারের গড়ে ব্যয় ৫০ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলামসহ আরও অনেকে।