পাবনার হিমাইতপুর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ আশ্রমের চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাবেক সভাপতি সুধীর রঞ্জন চৌধুরী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শংকর সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে অর্ঘ্য প্রস্বস্তির মাধ্যমে আদায়কৃত ইষ্টার্ঘ্যের প্রায় কোটি টাকা ঠাকুরের ফিলানথপিতে জমা না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে ইষ্টার্ঘ্যের পূর্ব ও বর্তমান মিলিয়ে কত টাকা আদায় করেছেন তার সঠিক হিসাবও দাখিল করেননি বলে লিখিত অভিযোগে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ২০১৬ সালে ৩০০ টি অর্ঘ্য প্রস্বস্তি বই কেন্দ্রীয় সৎসঙ্গ হিমাইতপুর পাবনা থেকে চট্টগ্রাম সৎসঙ্গ জেলা শাখার তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শংকর সেনগুপ্ত গ্রহণ করেন। দীর্ঘ সময়ে অর্ঘ্য প্রস্বস্তির বইয়ের মাধ্যমে ইষ্টার্ঘ্য সংগ্রহ করার পর ২৮৮ টি রশিদ বইয়ের মুড়ি বই কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সে সময়ে আশ্রমের ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা করা হয় ২৫ লক্ষ টাকা। ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল চলমান পর্যন্ত চট্টগ্রাম সৎসঙ্গ শাখা থেকে আর কোন ইষ্টার্ঘ্য পাঠানো হয়নি। ফলে চট্টগ্রাম এলাকায় দীক্ষাদাতা সহপ্রতিঋত্বিকদের ঋত্বিকী প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। ১ কোটি ৭ লক্ষ ৪১ হাজার ৬৮১ টাকা ইষ্টার্ঘ্য আদায় করা হলেও ৮৩ লক্ষ টাকা এখনও সৎসঙ্গ আশ্রম পাবনাতে জমা করা হয়নি।
সৎসঙ্গ হিমাইতপুর পাবনার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার সাহা বলেন, ঠাকুরের ইষ্টার্ঘ্য সংগ্রহকৃত প্রণামীর টাকা কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির কাছে গচ্ছিত রাখার বিধান নেই। অথচ টানা লম্বা সময় ধরেই চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক যোগসাজস করে প্রায় কোটি টাকা নিজেরা গচ্ছিত রেখেছেন। টাকাগুলো কেন্দ্রীয় সৎসঙ্গ হিসাব নম্বরে জমা করার জন্য বার বার লিখিত ও মৌখিক ভাবে তাগাদা দেয়ার পরও অজ্ঞাত কারনে তারা সে টাকা জমা না করে তালবাহানা করছেন। তাদের কর্মকান্ডই বলে দিচ্ছে তারা ঠাকুরের ভক্ত অনুসারী হলেও ঠাকুরের নির্দেশনা প্রতিপালন করছেন না।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সৎসঙ্গের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শংকর সেনগুপ্ত বলেন, ইষ্টার্ঘ্য সংগৃহিত টাকা কেন্দ্রীয় সৎসঙ্গে পাঠানোর কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তারপরও আমাদের সময়কালে বেশ কিছু টাকা পাঠিয়েছি। বাকি টাকাগুলো বিশেষ কাজের জন্য গচ্ছিত রাখা হয়েছে। কাজটা শুরু হলে পাঠানো হবে।
ঠাকুরের ইষ্টার্ঘ্যর টাকা নিজেদের হেফাজতে গচ্ছিত রাখার ব্যাপারে শংকর সেনগুপ্ত বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সৎসঙ্গ আশ্রম পাবনার সার্বিক অবস্থান ভালো নয়। নানা অনিয়ম, চুরি, অপব্যয় আর ক্ষমতার অপব্যবহার চলছে। পরিবেশ শান্ত হলেই টাকাগুলো ঠাকুরের মহৎ উদ্দেশ্যের কাজে ব্যয় করা হবে।
হিমাইতপুর কেন্দ্রীয় সৎসঙ্গ আশ্রমের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক দিলীপ পোদ্দার জানান, ঠাকুরের উদ্দেশ্যে হিমাইতপুর আশ্রমকে ভক্তদের দেয়া টাকা কোনো অজুহাতে আটকে রাখার সুযোগ নেই। হিমাইতপুর সৎসঙ্গের টাকা কি উদ্দেশ্য ব্যয় করা হবে তা ঠিক করবে হিমাইতপুর সৎসঙ্গের কমিটি। তিনি আরো জানান, হিমাইতপুর সৎসঙ্গের উপর অযাচিত খবরদারী ও হিমাইতপুর সৎসঙ্গ আশ্রমে বড় পদ প্রাপ্তির নিশ্চয়তার অপ-কৌশল হিসেবে তারা বেশ কয়েক বছর যাবত হিমাইতপুর সৎসঙ্গের টাকা আটকে রাখছেন।