যুক্তরাজ্যে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত চ্যারিটি এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালের (সিইআই) নির্বাহী সভা এবং বার্ষিক তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। এ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো বিশ^বিদ্যালয়সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব, অধ্যাপক ও গবেষক অংশগ্রহণ করেন। শনিবার জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর পরিচালক মো. আতাউর রহমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রথমদিন (২৫ জুলাই) সিইআই এর নির্বাহী সভায় অংশগ্রহণ করেন এবং সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ও বক্তব্য দেন। পরদিন রাতে স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় বার্ষিক তহবিল সংগ্রহ সভায় অংশগ্রহণ করেন উপাচার্য। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে যে সহযোগিতাপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেটিকে স্থায়ী করার জন্য আহ্বান জানান। উপাচার্য বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার শিক্ষা বিস্তারে সিইআই এর যেসব গৃহীত পদক্ষেপ রয়েছে তার প্রশংসা করেন। সভায় যোগদান করায় উপাচার্যকে সিইআই এর নেতৃবৃন্দ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।
উপাচার্য তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশ সৃষ্টির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের আত্মত্যাগ, বীরত্বগাঁথা ও গৌরবগাঁথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আত্মমর্যাদাবান জাতিরাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মাসেতু নির্মাণ, দারিদ্র্য বিমোচনসহ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করে স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন পরিবর্তিত নতুন রুপে পৌঁছেছে। এছাড়া উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলে সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বড় ভূমিকা পালন করছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ এখন মানবিকতায় অন্যদের জন্য অনুকরণীয় বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য।
বক্তব্যে বিশ^ব্যাপী শিক্ষায় যে রূপান্তর ঘটেছে এবং নতুন প্যারাডাইম শিপ্ট হয়েছে সে বিষয়ে গভীর আলোকপাত করেন উপাচার্য। বাংলাদেশও আধুনিক বিজ্ঞানমুখী ও সময়োপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করতে নিরন্তর কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্য। তিনি বলেন, দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক তৈরির পাশাপাশি কোভিডোত্তর পৃথিবীতে মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা আবশ্যক।
সিইআই’র সভাপতি ড. ম্যালকম গ্রিনের সভাপতিত্বে সভায় সিইআইয়ের বাংলাদেশ অংশের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর আইরিন গ্রাহাম বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমের উপর বক্তব্য তুলে ধরেন। এই সংগঠনের আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি। সভায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন এন্ড্রু মুইয়ারহেড, ইভান রাসেল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রফেসর ড. মোজাম্মেল হক।
উল্লেখ্য, সিইআই বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার মানোন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রেখে চলেছে। সংগঠনটি এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষা প্রসার এবং ‘মঙ্গা’ দূরীকরণে সংগঠনটির একাধিক প্রকল্প রয়েছে। সেখানে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। অন্যান্য দেশেও তাদের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। সিইআই তাদের নির্বাহী পর্ষদের সভায় এবং বার্ষিক তহবিল সংগ্রহ সভায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানায়।