দেশের উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নেতৃবৃন্দকে শান্তিপূর্ণ পন্থায় সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংগঠন ‘বিপিএসএন’। রবিবার ঢাকা বিশ^বিদ্যিালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক’ (বিপিএসএন) -এর শিক্ষক-গবেষকগণ এক বিবৃতিতে বলেন, “গণতন্ত্র সর্বোৎকৃষ্ট রাজনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত। তবে এর চর্চা কিছুতেই সহজসাধ্য নয়। এর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন, পরমতসহিষ্ণুতা, জনগণের ইচ্ছার স্বাধীনভাবে প্রকাশের সুযোগ ও জন-ইচ্ছাকে সকল রাজনৈতিক কর্মকা-ের কেন্দ্র বিন্দুতে স্থান দেয়া। বাংলাদেশের মতো পরস্পর বিরোধী ধারায় বিভক্ত সাংঘর্ষিক, প্রতিহিংসা-প্রতিরোধপরায়ণ রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের চর্চা খুবই দূরূহ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মুখে তা এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাই বলে, হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোন অবকাশ নেই। শান্তি-শৃঙ্খলা, উন্নয়ন-অগ্রগতি, অন্য কথায়, দেশ-জাতি-জনগণের স্বার্থে কোনরূপ সহিংসতা কাম্য হতে পারে না। যে বা যারা এরূপ পন্থা অবলম্বন করে, তা কখনো তাদেরও স্বার্থের অনুকূলে যায় না। আমাদের নিকট অতীতের অভিজ্ঞতাও সে কথা বলে। পরমুখী হয়ে দেশের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান কাক্সিক্ষত ও সম্মানজনক যেমন নয়, তেমনি তা সম্ভবও নয়। দেশের নেতৃবৃন্দকেই এর সমাধান খুঁজে পেতে হবে।
বাস্তব পরিস্থিতির তাগিদ মেনে নিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি বা মানুষের প্রাণহানি ও সম্পদ বিনষ্ট করে-এমন পন্থা পরিত্যাগ করে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের দেশ শাসনের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে সাংবিধানিক ধারায়, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা নিরসনে অগ্রবর্তী হওয়ার জন্য আমরা সরকার ও বিরোধী দল নির্বিশেষে সকল নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে ভয়-ভীতিহীন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান আমাদের জন্য একান্ত অপরিহার্য। আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, গণতন্ত্রের চর্চা ক্ষণিকের কোন বিষয় নয় বরং তা সার্বক্ষণিক। এর অব্যাহত চর্চার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান-কাঠামো গড়ে ওঠার সুযোগ পায়, যা ব্যতীত গণতন্ত্র কখনো নিরাপদ-নির্বিঘœ বা টেকসই হতে পারে না। আর গণতন্ত্র টেকসই হলে শুধু এক পক্ষই নয়, বস্তুত সকল পক্ষই কোনো না কোনোভাবে বিজয়ী হয়।”
বিবৃতিদানকারীগণ হলেন- জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, চট্টগ্রাম ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক মু. আনসার উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শামসুন্নাহার খানম, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ভূঁইয়া মনোয়ার কবির, সেন্টার ফর পার্লামেন্ট স্টাডিজ, ঢাকা এর পরিচালক ড. জালাল ফিরোজ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব হোসেন, অধ্যাপক ড. রফিক শাহরিয়ার ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মামুন আল মোস্তফা, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাসান জাকিরুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমীন, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসমা বিনতে ইকবাল, সহযোগী অধ্যাপক ড. নিবেদিতা রায় ও সহকারী অধ্যাপক মিসেস নাজিয়া আরেফা, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন (ইউজিসি) এর ড. ফেরদৌস জামান, রংপুর বিশ^বিদ্যালয়ের শরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ডেমক্রেসি এর পরিচালক ড. শরিফ আহমেদ চৌধুরী।