চলমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে প্রতি সপ্তাহে সোমবার অনলাইন ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কর্তৃপক্ষ। রোববার (৩০শে জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী সপ্তাহ থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা।
রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়, রেভিনিউ খাতের ব্যয় সাশ্রয় ও হ্রাস করা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ব্যয় ২৫% সাশ্রয় করা আবশ্যক। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্বকারী সবার মতামত গ্রহণ করা হয়েছে এবং সহমত পোষণ করেছেন। এমতাবস্থায় প্রতি সপ্তাহে সোমবার অনলাইনে ক্লাস পরিচালনার জন্য সকল শিক্ষকদের অনুরোধ করা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহ সোমবার অনুষ্ঠিত হবে না আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসসমূহ যথারীতি চলবে।
এ বিষয়ে আল-ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের এমন স্বিদ্ধান্তের প্রতি আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এমনিতেই আমাদের ছয় মাস ক্লাস বন্ধ থাকে এবং পরীক্ষার কারণে আরো কিছু সময় ক্লাস বন্ধ থাকে। যেখানে অল্প কিছুদিন মাত্র শিক্ষার্থীরা ক্লাস করার সুযোগ পায় সেখানে যদি আরো একদিন ক্লাস অনলাইনে হয় তাহলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করবে। যা শিক্ষার জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরুপ।
বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ইবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিরুল কবির সৌরভ বলেন, অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া এটাকে আমি কৌশলে একদিন ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বলবো। যেখানে ক্যাম্পাসের প্রতিটি জায়গায় নেট অবস্থা করুণ সেখানে অনলাইন ক্লাসের নামে প্রশাসন একটা প্রহসনের সৃষ্টি করেছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থী খুবই একটা ক্ষতির মুখে পড়বে। করোনার ধাক্কার পর এই ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান সুইট বলেন, অনলাইনে পাঠদানের মাধ্যমে পাঠদানের মুল উদ্দেশ্য ব্যহত হবে। অনতিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসবে বলে আশা করছি।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ডিন ও বিভাগের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। হয়তো আগামী সপ্তাহ থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
আবির হোসেন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি