আশঙ্কা ছিল, সেটাই সত্যি হলো। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল কৃষ্ণসাগর। ফলে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য আফ্রিকা এবং এশিয়ায় যেতে পারছিল না। কার্যত খাদ্যসংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এমনই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে খাদ্যশস্যের চুক্তি সই হয়েছিল। যার অর্থ, কৃষ্ণসাগর দিয়ে জাহাজে করে আফ্রিকা এবং এশিয়ায় খাদ্যশস্য পাঠাতে পারবে ইউক্রেন ও রাশিয়া। এতদিন পর সেই চুক্তি বাতিল হয়ে গেল। চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াল রাশিয়া।

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন এবং ক্রিমিয়ার মধ্যবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সেতু কার্চ ব্রিজ। সোমবার সেই সেতুতে ইউক্রেন আক্রমণ চালিয়েছে বলে রাশিয়ার অভিযোগ। সেতুটি আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে। ইউক্রেন অবশ্য মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আক্রমণের কথা স্বীকার করেনি। ওই সেতুটি ধ্বংস হওয়ায় ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়া যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ গেছে। রাশিয়ার বহু পর্যটক ইউক্রেনে আটকে পড়েছেন। তাদের বিকল্প রাস্তা দিয়ে আসতে বলেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। যে রাস্তা তাদের বলা হয়েছে, তা কার্যত রণক্ষেত্রের মাঝখান দিয়ে যাওয়ার রাস্তা।

ক্রিমিয়া ব্রিজ ধ্বংস হওয়ার পরেই খাদ্যশস্যের চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। তবে দুটি কারণকে মেলায়নি রাশিয়া। অর্থাৎ, ব্রিজ ধ্বংসের জন্যই তারা চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, এমন কথা সরকারিভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ কারণেই তারা সরে দাঁড়িয়েছে।

জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানো একটা চয়েস। কিন্তু এর ফলে যারা খাদ্যকষ্টে ভুগবেন, খিদের সঙ্গে লড়াই করবেন, তাদের হাতে আর কোনো চয়েস নেই।’

রাশিয়ার এই অবস্থানের তীব্র বিরোধিতা করেছেন তিনি। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। এখনো তার কোনো জবাব আসেনি।

গুতেরেসের বিবৃতি প্রকাশিত হওয়ার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তার সঙ্গে গুতেরেসের ফোনে কথা হয়েছে। বিকল্প রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।