আগামীকাল বুধবার সমাবেশে বিপুল জনসমাগম যেন না হয় সে জন্য পর্দার আড়ালে সরকার ‘ননসেন্স’ কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার রাতে নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন তিনি এ অভিযোগ করেন।

অতীতের মতো সরকার হয়তো বাধা দেবে না, কিন্তু সরকার কিন্তু বসে নেই জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপির প্যাড ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একটি ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে- বিএনপির সমাবেশ আগামীকাল ১২ জুলাই বুধবারের পরিবর্তে ২২ জুলাই শনিবার ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো যার যার অবস্থানে থেকে সমাবেশ করবে- যা সম্পূর্ণরূপে অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও জনমনে সংশয় সৃষ্টি করার অপচেষ্টা মাত্র। সুপরিকল্পিতভাবে সমাবেশকে নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার ও সৈয়দ এমরান সালে প্রিন্সের স্বাক্ষর দেখিয়ে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে তা ডাহা জালিয়াতি। আমি সুস্পষ্টভাবে আবারো আপনাদের সামনে বলতে চাই- আগামীকাল ১২ জুলাই নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টায় বিএনপি’র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি কোনো ধরনের অপপ্রচারে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর কর্মসূচিতে ভীত হয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দিবা-রাত্রী মিথ্যা বলাই আওয়ামী লীগের জীবন-জীবীকার একমাত্র উপায়। বিএনপি’র আগামীকালের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আগামীকালের সমাবেশে জনতার ঢল নামবে, এই সমাবেশ হবে ঐতিহাসিক।

জনগণের মধ্যে আওয়ামী লীগের ভিত্তি ধসে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, তাই তারা অপপ্রচারকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। আগামীকালের সমাবেশ নিয়ে ঢাকাবাসীর মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে হতাশ করার জন্য এই ভিত্তিহীন মিথ্যা বিবৃতি দেয়া হয়েছে। সরকারের নানা সংস্থাকে দিয়ে আগামীকালের সমাবেশ থেকে মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরানোর জন্যই এই বানোয়াট বিবৃতি তৈরি করে গণমাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আগামীকালের সমাবেশকে বিভিন্নভাবে বানচালের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের কাছে খবর এসেছে, আগামীকাল সমাবেশে বিপুল জনসমাগম যেন না হয় সে জন্য পর্দার আড়ালে ‘ননসেন্স’ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তারা বাস, ট্রাকের মালিকদেরকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। বাস মালিকেরা অগ্রিম টাকা নিয়ে সেগুলো ফেরত দিচ্ছে। এতেই বোঝা যায় প্রশাসনকে নামানো হয়েছে সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য। তবে কোনো বাধাই আর জনগণের মিছিলকে আটকাতে পারবে না। আগামীকাল ঢাকা মহানগরীর চারদিক থেকে মানুষের স্রোতধারা পল্টনে এসে মিলিত হবে। নিঃসন্দেহে আগামীকাল নয়াপল্টন এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আমি আবারো ঢাকাবাসীসহ সর্বস্তরের মানুষকে সরকারি অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন থাকার অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র যে বাস ভাড়া নিয়েছিল নেতাকর্মীরা। সেগুলোর বাস ভাড়ার টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। পর্দার আড়ালে এসব করছে সরকার ও তার গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা। সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাইকিং করা হলে ধানমন্ডি থানা এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে মাইক ও রিকশা ভেঙে ফেলেছে ও আহত করেছে। এমনকি প্রচারকারীর মোবাইলটিও ছিনিয়ে নেয় এই সরকারের লেলিয়ে দেয়া বাহিনী। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আটক শ্রমিকদল নেতার মুক্তি দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী।