স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তার পরিবার নিয়ে প্রথম আলো পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে মানিকগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন শেষে ওই পত্রিকার কয়েকটি কপি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

শনিবার দুপুর ১২টায় মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে জেলার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র রমজান আলীর সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব সাহার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আরশেদ আলী বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান জনি, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক বায়ক রমেজা আক্তার মাহিন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশি সুমন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিদুল ইসলাম প্রমুখ।

মানববন্ধন শেষে প্রথম আলো পত্রিকা মানিকগঞ্জে বয়কটের ঘোষণা দেন পৌর মেয়র রমজান আলী। এর পর প্রেসক্লাবের সামনে শহীদ রফিক চত্বরে নেতাকর্মীরা প্রথম আলো পত্রিকার কয়েকটি কপি আগুনে পুড়িয়ে দেন।

মানববন্ধনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বাধীনতার পর মানিকগঞ্জে বাটা কোম্পানি হতে পারেনি প্রশাসনের কারণে। এবার মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসকের গাফলতির কারণে ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বন্ধ হওয়ার পথে। সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) এই প্রকল্পটি মানিকগঞ্জে হলে ৫ থেকে ৬ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হতো।

তিনি আরও বলেন, প্রথম আলোর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রথম আলো হচ্ছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। প্রথম আলো দেশের উন্নয়ন চায় না, মানুষের উন্নয়ন চায় না, তারা দেশের গণতন্ত্র চায় না, তাদের কাছ হচ্ছে বেছে বেছে যেসব এমপি-মন্ত্রী ভালো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে জনগণের সামনে হেয় করা। প্রথম আলো সংবাদ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে শুধু ষড়যন্ত্র করেনি, তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। প্রথম আলো হচ্ছে মানবতাবিরোধী ও জঙ্গিবাদের পত্রিকা। এই পত্রিকা মানিকগঞ্জে বয়কট করা হলো, আজীবনের জন্য মানিকগঞ্জে নিষিদ্ধ করা হলো, এখন থেকে মানিকগঞ্জে এই পত্রিকা আর কেউ পড়বেন না ও রাখবেন না।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব সাহা বলেন, সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) প্রকল্পটিতে সরকারের একটি টাকাও খরচ হয়নি, সেই প্রকল্পে কীভাবে একশ’ কোটি টাকার দুর্নীতি হলো? যাদের কারণে মানিকগঞ্জের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের জবাব দিতে হবে জনগণের কাছে। প্রথম আলো অসত্য তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রথম আলোর চোখে পড়ে না। তাদের কাজ হচ্ছে দেশের উন্নয়নের বিরোধিতা করা। এই পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়াতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কিছু আসে যায় না।

পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আরশেদ আলী বলেন, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতেই প্রশাসনের চিহ্নিত কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার সহযোগিতায় প্রথম আলো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে।

জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক রমেজা আক্তার মাহিন বলেন, প্রথম আলো হচ্ছে দেশদ্রোহী পত্রিকা, এটির নিবন্ধন বন্ধ করার জন্য আমি দাবি জানাচ্ছি।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইমি সুমন বলেন, প্রথম আলো সত্য যাচাই-বাছাই না করেই নিউজ করে। তাদের মিথ্যা নিউজের কারণে জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়। এর দায়ভার প্রথম আলোকে নিতে হবে।

যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান জনি বলেন, প্রথম আলো একটি বিতর্কিত পত্রিকা, এটি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি, তারা দেশের উন্নয়ন মেনে নিতে পারেন না। আজ থেকে প্রথম আলো মানিকগঞ্জে বয়কট করা হলো।