নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস করতে দেশে আগামী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস হলে দেশের ভবিষ্যত খারাপ হবে। এটা বর্তমানে আমাদের ভয়। এ মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শনিবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ‘ডিক্যাব টক’ আয়োজন করে কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব)। এতে মূল অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে যারাই আসবেন তাদের আমরা স্বাগত জানাই। আমাদের কোনো কিছুই লুকানোর নাই। বিদেশিরা এসে নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারে। ভালো বিষয়ে পরামর্শ দিলে আমরা স্বাগত জানাব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিশরের মতো আমরা বড় রাজনৈতিক দল বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চাই না। আফগানিস্তানের মতো বড় দল বাদ দিয়ে বা মিয়ানমারের মতো নির্বাচন করতে চাই না, যেগুলোকে ওনারা (পশ্চিমা দেশগুলো) ভালো বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। আমরা সব দলকে নিয়েই নির্বাচন করতে চাই। যে দল অংশগ্রহণ করবে না, সেটি তাদের সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, কোনোদিন ভারতে সন্ত্রাসী দল নির্বাচনে আসেনি, যুক্তরাষ্ট্রে নাজি দল নাই এবং তারা গ্রহণযোগ্য নয়। এ দেশে সন্ত্রাসী দল থাকতে পারে। তারা যদি নির্বাচনে না আসে, তা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে না। আমরা চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। সন্ত্রাসী দল যদি নির্বাচনে যোগ না দেয়, কোনো অসুবিধা নেই। তবে যারা রাজনৈতিক দল তাদের সবাইকে নির্বাচনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানাই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের ভয়টা হচ্ছে অতি সন্নাসীতে গাজন নষ্ট। তারা কেউ কেউ হয়তো নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবেন। সেটা যদি করেন, তাহলে দেশের অমঙ্গল ডেকে নিয়ে আসবেন। নির্বাচন প্রক্রিয়া যাতে ধ্বংস না হয়, এ বিষয়ে সবার সজাগ থাকতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস হলে দেশের ভবিষ্যত খারাপ হবে। এটা আমাদের ভয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া যাতে ধ্বংস না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি চাপ, তৎপরতা ও বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ নিয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের দেশগুলোতে ২৫-৩০ শতাংশ জনগণ ভোট দেয়। আর বাংলাদেশে ৭০ শতাংশের নিচে ভোট পড়ে না। আমাদের দেশে অংশগ্রহণ ভালো।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১০০টির মতো রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে একটি বা দুটি দল অংশগ্রহণ না করলেও অধিকাংশই করে। যারা অংশগ্রহণ করেন না, তাদের আহ্বান করব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে।

সব রাজনৈতিক দল যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেজন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ছবিযুক্ত ভোটার পরিচয়পত্রের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকার অবাধ ও মুক্ত নির্বাচনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিদেশিরা যারা এ বিষয়ে বলেন তাদের কি অবস্থা? যুক্তরাষ্ট্রে ২৫০ বছরের গণতন্ত্র, সেখানে অনেক দুর্বলতা রয়েছে, তাদের দেশের লোকরাই সেটা বলে। বিদেশিরা বাংলাদেশে আসছেন আমরা তাদের স্বাগত জানাই। তারা আসুক, দেখুক। আমি আশা করি, তারাই তখন সার্টিফিকেট দেবে বাংলাদেশে দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন হয়েছে। আমরা আশা করছি, আমাদের নির্বাচন বিশ্বে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডিক্যাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।