ঢাকায় গরু বিক্রির ১৪ লাখ টাকা নিয়ে পাঁচ ব্যবসায়ী বাড়ি ফেরার পথে ডাকাতদলের কবলে পড়ে ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনায় ৯ ডাকাত সদস্যদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়।
রোববার (২জুলাই) দুপুরে নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতদলের সদস্যরা হলেন- মোঃ ইনসানুল (২৭), মোঃ আরিফ (২৫), মোঃ মিঠুন (২৮), মোঃ শাহ আলম (২৪), মোঃ রুবেল (৩২), মোঃ সোহাগ (২৫), মোঃ সুজন (৩০), মোঃ রেজাউল (৩৫) এবং মোঃ রসুল (৩২)।
পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান জানান, বগুড়া থেকে ১৫টি গরু নিয়ে পাঁচ ব্যবসায়ী ঢাকা আফতাব নগরের হাটে আসেন। হাটে গরু বিক্রি করে তারা একটি ট্রাকে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় ট্রাকে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের ডাকাত বলে পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে গরু বিক্রির টাকা দিতে চায়। টাকা না দিলে খুন করবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ডাকাতদল ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা গরু বিক্রয়ের টাকা জোর করে নেয়ার চেষ্টা করলে তারা টাকা দিতে না চাইলে ডাকাতদলের সদস্যরা তাদের গামছা ও লুঙ্গি দ্বারা তাদের দু-হাত, দু-পা বেঁধে ফেলে ও মুখে কসটেপ দিয়ে আটকিয়ে ট্রাকের ভেতর ফেলে বাঁশের লাঠি যারা এলোপাথারীভাবে মারপিট করে। পরে ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা গরু বিক্রির নগদ ১৪ লাখ ১২ হাজার ৮০০ টাকা নিয়ে নেয়। এসময় শহিদুল ইসলাম নামে অপর ব্যবসায়ীর কাছ থাকা গরু বিক্রির টাকা চাইলে তিনি অস্বীকার করলে তাকে মারপিট করে এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ডাকাতদল। পরে বুধবার (২৮ জুন) রাতে তার মরদেহ বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে আগ্রান ফিলিং স্টেশনের পশ্চিমে ৮নং ব্রীজে ফেলে দেয়। এছাড়াও আঃ সালাম নামে অপর জনকে চাটমোহর গামী রাস্তায় হান্ডিয়াল নামক স্থানে ভাঙ্গা ব্রীজের সামনে চলন্ত ট্রাক থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে দেয়। অপর তিন ব্যবসায়ী মোঃ নূর আলম, মোঃ রেজাউল করিম, মোঃ ইউনুছ আলীকে ফেলে দেয়। পরে পুলিশ হত্যার রহস্য ও টাকা উদ্ধারে অভিযানে নামে। পরে নাটোর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাকাত দলের ৯ সদস্যদের পুলিশ গ্রেফতার করে। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক জব্দ এবং নগদ ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে ঢাকার আফতাব নগর হাটে গরু বিক্রি করে মঙ্গলবার রাতে নিজ এলাকা বগুড়ার সারিয়াকান্দি ফেরার জন্য একটি ট্রাকে উঠেন ৫ ব্যবসায়ী। চন্দ্রা এলাকা পার হওয়ার পরই ট্রাকে থাকা ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে গরু ব্যবসায়ীদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর তাদের কাছে থাকা গরু বিক্রির সাড়ে ১৪ লাখ টাকা লুট করে ডাকাতদল। সড়কে যানজট ও ধীরগতির কারণে নাটোর পৌঁছাতে বুধবার রাত হয়ে যায়। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত ডাকাতদের নির্যাতনে শহিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়। পরে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের আগ্রান এলাকা থেকে ওই ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়