গাজীপুরে ঈদের আগেরদিন সন্ধ্যায় (চাঁদরাতে) সেলুন থেকে ধরে নিয়ে পুলিশের এক সোর্সকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার মূল আসামীকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে শনিবার ভোর রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন দেশীপাড়া এলাকায় খুনের এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম- ফাহরিয়ার আহমেদ ফারুক (৩৫)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার দেশীপাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম সিকদারের ছেলে।
গ্রেফতারকৃত বাদল হোসেন (৪০) একই থানার দেশীপাড়া নতুন বাজার এলাকার মনসুর আলীর ছেলে।
পুলিশ, এলাকাবাসি ও নিহতের পরিবার জানায়, ঈদের আগেরদিন বুধবার সন্ধ্যায় (২৮ জুন) ছোট ছেলে আয়ানকে (২) চুল কাটাতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী হারেজ মার্কেটের একটি সেলুনে নিয়ে যান ফারুক। এসময় স্থানীয় বাদল ও আলতাফ সহ কয়েক যুবক ফারুককে টেনে হেঁচড়ে ওই সেলুন থেকে বের করে একটি কাঠ বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ফারুককে উলঙ্গ করে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে যুবকরা। পরে তার লাশ একটি ডোবায় ফেলে পালিয়ে যায় হত্যাকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
জিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান জানান, এঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপ্রেক্ষিতে আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অভিযানের এক পর্যায়ে পুলিশ শনিবার ভোররাতে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে মামলার প্রধান আসামী বাদলকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হলে আদালত দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত বাদল মাদক ব্যবসায়ী এবং কুখ্যাত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে সদর থানায় ৪টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাদল পুলিশকে জানিয়েছে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফারুককে কুপিয়ে খুন করেছে। গ্রেফতারকৃতের দেখানো মতে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।
নিহতের মা রোকেয়া বেগম ও পরিবার জানায়, ফারুক দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করছিল। এ কারণে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা তার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। এর জেরে ঈদের আগে চাঁদরাতে ফারুককে কুপিয়ে খুন করা হয়।