পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, ‘ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঘরমুখী ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ও নির্ধারিত সময়ে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে ২৪ ঘণ্টা সড়কে থাকবেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অনেক সময় অভিযোগকারীকে যথাসময়ে সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। এ জন্য এবার মহাসড়কে সক্রিয় থাকবে পুলিশের মোটরসাইকেল পেট্রল টিম, যাতে দ্রুত সময়ে অভিযোগ শোনা ও ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’

সোমবার রাজধানীর গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। আইজিপি বলেন, ‘গত ঈদে সবার সার্বিক সহযোগিতায় ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে পেরেছি। সাধারণ মানুষ আশ্বস্ত হয়েছেন ও যার যার গন্তব্যে নির্বিঘ্নে ও যথাসময়ে যেতে পেরেছেন। এবারও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’

আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘মহানগর পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ, র‍্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, নৌ পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশসহ সব ইউনিট একযোগে কাজ করছে। বাস ও ট্রাক মালিক–শ্রমিক, পশু হাটের ইজারাদার ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি, কেউ হয়রানি শিকার হচ্ছেন কি না তা জানার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত সবাই স্বস্তিদায়কই বলছেন।’

অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে বাস-ট্রেনে বা নৌপরিবহনে গমনাগমন না করতে অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহন না চালানোর জন্য পুলিশের পক্ষ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনও প্রচার করা হয়েছে। খালি পিকআপ ও ট্রাকে যাত্রী হিসেবে উঠবেন। এরপরও যদি কোনো যাত্রী ট্রাকে বা পিকআপে ওঠেন, তাহলে পুলিশ সদস্যরা দেখামাত্র সড়কের নামিয়ে দেবে। সুতরাং, নেমে ভোগান্তিতে পড়ার আগে স্বাভাবিক গণপরিবহন ব্যবহার করুন।’

তিনি বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের চেয়ে ঈদুল আজহায় পুলিশের দায়িত্ব বেশি। এবার সড়কে শুধু ঈদযাত্রা নয়, কোরবানির হাটের নিরাপত্তাও দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি মৌসুমি ফল ও কোরবানির হাটে পশুবাহী যানবাহনকে নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ।’

অপরাধীদের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আইজিপি বলেন, ‘যারা জাল টাকার কারবার করেন তারা হুঁশিয়ার হয়ে যান। গত দুই মাসে তিন কোটি ৬১ লাখ জাল টাকা উদ্ধার ও কারবারিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, ছিনতাইকারীসহ যারা প্রতারণার কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। কেউ প্রতারিত হলে সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল দিন, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’

ঈদের ছুটিতে যারা ঢাকাসহ শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন তাদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, ‘আমরা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ঈদ উপলক্ষে জনসমাগম বাড়বে। সে কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ কর্মকর্তারা দিন-রাত দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।’

তিনি বলেন, ‘ঈদে যারা ঢাকা শহর ছেড়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে যাবেন, তারা নিজেদের প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মূল্যবান জিনিসপত্র সযত্নে ও নিরাপদে রেখে যাবেন। কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে পুলিশকে জানান।’

এ সময় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ, সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।