ইউক্রেনে কাখভোকা বাঁধ ধ্বংসে জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার পাখি ও ২০ হাজার বন্যপশু মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে। শুক্রবার নিজ বক্তব্যে এমন আশঙ্কাই করলেন দেশটির পরিবেশ সুরক্ষামন্ত্রী রুসলান স্ট্রিলেটস। তার মতে ক্রমবর্ধমান পানির উচ্চতা প্রাণীদের বাস্তুসংস্থানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। রুসলান আরও বলেন, ‘প্রকৃতি দ্বারা সৃষ্ট এই বাস্ততন্ত্রগুলোকে তাদের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এতে কয়েক দশক সময় লাগবে। টাকা দিয়ে আমাদের এ অনন্য প্রকৃতিকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না।’

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, টন টন বর্জ্য, নোংরা আবর্জনা, জলাধারের আশপাশের জমে থাকা সবকিছু দিনিপ্রো নদী থেকে কৃষ্ণসাগরে প্রবাহিত হচ্ছে। ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে পানির গুণগত মান। ইতোমধ্যেই ইমারল্যান্ড নেটওয়ার্কের ৯টি এলাকাও রামসার আশপাশে ৭৬ হাজার হেক্টর জমি বিলুপ্তির পথে রয়েছে। খেরসনের এমটিভি ব্যাংকের কর্মকর্তা ক্রুচিনিনা দারিয়া শুক্রবার বলেছেন, ‘গবেষকরা সতর্ক করে বলছেন-আশপাশের উর্বর জমিগুলোও এখন মরুভূমিতে পরিণত হবে।’

খেরসনসহ বিভিন্ন শহরে দিনিপ্রো নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। খেরসন শহরে সেই বানের পানিতে মানুষের লাশ ভাসছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘ছাদে আশ্রয় নেওয়াদের অনেকেই বন্যার পানিতে লাশ ভাসতে দেখেছেন। আমার বিশ্বাস, আপনারা (সাংবাদিক) যদি খোঁজ নেন সেক্ষেত্রে এই তথ্যের সত্যতা পাবেন।’

শুধু লাশ নয়, ভেসে যাচ্ছে ঘরবাড়িও। শুক্রবার বন্দরনগরী ওডেসার ইউঝন শহরের কাছাকাছি অঞ্চলে কৃষ্ণসাগরের বেশ কয়েকটি ভাসমান বাড়ি দেখেছেন স্থানীয়রা। ৬ জুন বাঁধ ধ্বংসের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৩ জনের প্রাণহানির খবর দিয়েছে বিবিসি। এখনো আটক পড়ে আছেন শত শত মানুষ। যার টেলিগ্রামে পোস্ট করে ভয়াবহ বন্যা থেকে উদ্ধারের জন্য সাহায্য চাইছে। রুশ অধিকৃত দিনিপ্রো নদীর পাশে একটি স্থানে ৩৫ জন আটকা পড়ে আছে। এক বাসিন্দা স্বিতলানা লিখেছেন, ‘সবাই ছাদে আছি। বাচ্চারা চিৎকার করছে ও কাঁদছে। প্লিজ! প্লিজ! আমাদের সাহায্য করুন।’

ইউক্রেনে সেনা পাঠাবে মিত্ররা-ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব : লিথুয়ানিয়ায় রাজধানী ভিলনিয়াসে হতে যাচ্ছে ২০২৩ সালের ন্যাটো সম্মেলন। ১১ জুলাই আসন্ন সম্মেলনে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে জোট মিত্ররা কিয়েভে সৈন্য পাঠাবে-এমনটাই জানিয়েছে ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব অ্যান্ডার্স রাসমুসেন। বর্তমান ন্যাটোপ্রধান জেন্স স্টেলেনবার্গের বক্তব্যের রেশ ধরে এ মন্তব্য করেন তিনি। এক বিবৃতিতে স্টেলেনবার্গ জানিয়েছিলেন, ‘সম্মেলনের সদস্য হিসাবে ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হবে। তবে শুধু সদস্য দেশগুলোকেই পুরোপুরি নিরাপত্তা দিতে বাধ্য জোটটি।’ এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাসমুসেন বলছেন, ‘ন্যাটো যদি ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য স্পষ্ট কোনো ব্যবস্থা না নিতে পারে তাহলে স্বতন্ত্রভাবে জোটের মিত্ররা দৃঢ়ভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।