দেশব্যাপী চলমান তীব্র লোডশেডিংকে অসহনীয় উল্লেখ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি–গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেলের জোগান দিতে কষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। বর্তমানে ২ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। এ কারণে লোডশেডিং ধীরে ধীরে বেড়ে গেছে। বর্তমানে চলমান লোডশেডিং অসহনীয় হয়ে পড়েছে।’

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে আসতে আরো দুই সপ্তাহ সময় প্রয়োজন।

চলমান লোডশেডিং কমানোর জন্য নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা লোডশেডিং পরিস্থিতি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা কত তাড়াতাড়ি আনা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে। আশা করি ১০-১৫ দিনের মধ্যে লোডশেডিংয়ের চলমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।’

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আরো বলেন, কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে। জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে। দ্রুত সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগ চেষ্টা করছে। হিটওয়েভ হচ্ছে, ফলে চাহিদা বেড়ে গেছে। জ্বালানি জোগান দিতে কষ্ট হচ্ছে। অনেক কেন্দ্র অর্ধেক উৎপাদন করছে। ফলে কিছুদিন ধরে লোডশেডিং বেড়ে গেছে।

ডলার সংকটের কারণে কয়লার পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার দুটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পথে। এর মধ্যে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে আজ রাতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর রামপালও পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না।

রোববার জ্বালানি কিনতে সমন্বয়ের অভাবকে দোষারোপ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডলার সংকট নিরসনে দুই মাস আগে থেকেই চেষ্টা করছিলাম। ডলার সরবরাহের সাথে অর্থনৈতিক বিষয়, এলসি খোলার বিষয় থাকে, সব সমন্বয় করতে হয়। আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রস্তুত করে বসে আছি। জ্বালানি আসার পেছনের বিষয় সব সময় আমাদের হাতে থাকে না। সমন্বয় কোথাও বাধাগ্রস্ত হলেই সমস্যা হয়। এবারো তাই হয়েছে। সমন্বয় হলে জ্বালানি সংকট হতো না।’

তবে গত বছরের জুলাইয়ের মতো সূচি করে পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের চিন্তা আপাতত নেই বলে জানিয়েছেন নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, তাপপ্রবাহ চলছে, তাই বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে গেছে। আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।