বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা গ্রামে সুদে কারবারিদের অত্যাচার সইতে না রাজকুমার বিশ্বাস (৬০) নামের এক মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীর আত্মহত্যার ঘটনায় তুহিন রায় নামের এক সুদে কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০মে) দিবাগত গভীর রাতে খুলনা লবনচরা থানার জিন্নপাড়া এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে সুদে কারবারিদের অত্যাচার সইতে না পেরে গত (১৯ মে) শুক্রবার গভীর রাতে নিজ বাড়ীরে আঙ্গিনায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে রাজকুমার। এসময় তার পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। যাতে আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী হিসাবে স্থানীয় সুদে ব্যবসায়ী তুহিন রায় ও মিলন অধিকারীর নাম উল্লেখ করেন তিনি। পরে এ ঘটনায় রাজকুমারের জামাই উত্তম কুমার সরকার দাবী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে এনে তুহিন রায় ও মিলন অধিকারীসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনের নামে রামপাল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। গ্রেপ্তার সুদে কারবারি তুহিন রায় উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের উত্তর গৌরম্ভা গ্রামের হারান চন্দ্র রায় এর ছেলে। এ মামলার অপর আসামী মিলন অধিকারী একই গ্রামের অজিত অধিকারীর ছেলে।
রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ এস,এম, আশরাফুল আলম জানান, ঘের ব্যবসায় লস খেয়ে রাজকুমার বিশ্বাস ঋণগ্রস্ত হয়ে পরে। একটা সময় বাধ্য হয়ে একই এলাকার সুদে কারবারী তুহিন ও মিলনের কাছ থেকে লাখে ৬ হাজার টাকা সুদে টাকা ধার নেয়। এসময় রাজকুমার দুই সুদে ব্যবসায়ীকে সুদের মোটা অংঙ্কের টাকা প্ররিশোধও করে। এরই মধ্যে দরিদ্র রাজকুমার কয়েক কিস্তি সুদের টাকা দিতে ব্যার্থ হলে তুহিন ও মিলনসহ তাদের লোকজন রাজকুমারকে গালিগালাজসহ বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগসহ করতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে শালিস-বৈঠকর মাধ্যমে সুদ বাদে মূল টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও তুহিন ও মিলন সেটা না মেনে গত (১৮মে) বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার গৌরম্ভা বাজার এলাকায় আসামীগণ উক্ত টাকার জন্য রাজকুমারকে বিভিন্ন চাপ ও গালিগালাজ করেন। এ অপমান সইতে না পেরে পরের দিন রাজকুমার আত্মহত্যা করে। এসময় তার জামার পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। যাতে লেখা ছিলো “তুহিন ও মিলন আমাকে বাঁচতে দিল না, তুহিন আমাকে অনেক গালিগালাজ করে, তাই আমি এই পথ বেছে নিয়েছি”।