গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে, ততোই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। ঘটছে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনাও। বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী (টেবিল ঘড়ি) জায়েদা খাতুনের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার গাড়িসহ ৪/৫টি গাড়ি ভাংচুর করেছে। এসময় সাবেক মেয়র ও তার মা সহ কয়েকজন আহত হন।
সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও গাড়ির চালক জানান, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের গাড়িতে চড়ে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মা জায়েদা খাতুনের সঙ্গে টঙ্গীর ৪৪ নং ওয়ার্ডের পাগাড়ের পূর্ব গোপালপুর এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এসময় ১৫-২০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ইটপাটকেল ছুঁড়ে ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। তারা প্রার্থীকে বহনকারী গাড়ি (প্রাডো জীপ) সহ ৪/৫টি গাড়ির ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, গাড়ি চালক শায়ের মাহমুদ শুভ, প্রার্থীর ক্যামেরাম্যান সুলতান মিয়া ও আশরাফুলসহ কয়েকজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত টঙ্গী পূর্ব থানায় নিয়ে গেলে সেখানে আশ্রয় নেন তারা। এঘটনায় মেয়র প্রার্থীর গাড়িচালক শায়ের মাহমুদ শুভ বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি অভিযোগ দেন। এতে রবিউল ইসলাম পাইলট ও খান সুমনসহ ১৫-২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। রাত নটার পর জাহাঙ্গীর আলম তাঁর মা জায়েদা খাতুনকে নিয়ে ছয়দানা এলাকার বাসভবনের উদ্দেশ্যে থানা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হামলাকারীরা আমার মা’কে হত্যার নীল নকশা করেছিল। এ নীল নকশা অনুযায়ী হামলাকারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা আমাকে ও আমার মা’কে হত্যা করতে চাচ্ছে। তারা ‘জয় বাংলা’ ও ‘নৌকার শ্লোগান’ দিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা আমার গাড়ি এবং আমার মায়ের ওপর প্রথমে ইট মেরেছে। তারা আমার ৭০ বছরের মায়ের গায়ে হাত তুলেছে। হামলায় আমি ও আমার আহত হলেও অল্পের জন্য প্রানে রক্ষা পাই। হামলাকারীরা আমাদের গাড়িসহ কয়েকটি গাড়ি ও প্রচারণার কাজে ব্যবহৃত মাইক ভাংচুর করেছে। এনিয়ে আমাদের গাড়িতে একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমি এ হামলার তীব্র নিন্দা ও হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবী জানাই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনও তাদের ভয়ে কিছু করছে না। এটা ভোটের কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ হতে পারে না। আমাদের যারা সাপোর্ট করে, তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তারা যেন আমাদের টেবিল ঘড়ি মার্কার ভোটটা না করে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে শহরের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। এসময় তিনি প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার আহবান জানান।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও তার ছেলে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম রাতে থানায় এসেছিলেন। তারা থানায় একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এভাবে হামলা করা ঠিক হয়নি। আমাদের কাছে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জিএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। প্রার্থী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।