দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৩০ জন নেতাকে দলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নোটিশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদেরকে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। শোকজ পাওয়া সবাই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে নগরীর ১৫নং ওয়ার্ড থেকে মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব বিএনপি নেতা ফয়সাল আহমাদ সরকার বিনা প্রতিদ্বন্দি¦তা নির্বাচিত হয়েছেন। শোকজ পাওয়া ওই ত্রিশ জন মহানগরীর বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও কর্মী। এদিকে বিএনপির কোন নেতাকর্মী মেয়র পদে অংশ না নিলেও বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে এবং বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা সরকার শাহনুর ইসলাম রনি ওই পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ওই শোকজ নোটিশে স্বাক্ষর করেন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দফতরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত ১৫ বছর ধরে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ দেশপ্রেমিক জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবীতে আন্দোলন করে আসছে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ প্রায় ৫ (পাঁচ) বছর যাবৎ কারাভোগ করছেন। সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন এবং প্রায় ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে। ইতোমধ্যে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গুম করে রাখা হয়েছে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোন প্রকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ আপনি (প্রার্থী) দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তি স্বার্থ চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। সুতরাং কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা, তার কারণ দর্শিয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দফতরে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।

এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের ৩৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হান্নান মিয়া হান্নু চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন। দলের চিঠি পেয়েছি। নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে শোকজের জবাব দেওয়া হবে।

শোকজ পাওয়া কাউন্সিলর প্রার্থী বিএনপি নেতারা হলেন- সদর মেট্রো থানার আহবায়ক হাসান আজমল ভূইয়া, সাবেক আহবায়ক হান্নান মিয়া হান্নু, বাসন মেট্রো থানার সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী মূসা, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফি উদ্দিন, টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শেখ আলেক, মহানগর শ্রমিকদলের আহবায়ক ফয়সার আহমাদ সরকার, পূবাইল থানা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বিকি, সাবেক আহবায়ক সুলতান উদ্দিন চেয়ারম্যান, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান, সদস্য মোঃ মাহবুবুর রশিদ খান শিপু, সবদের হাসান, খাইরুল আলম, জিএস নাসিমুল ইসলাম মনির, শহিদুল ইসলাম, তানবীর আহমেদ, আনোয়ার সরকার, রফিকুল ইসলাম রাতা, বাবু চৌধুরী, আবুল হাসেম, সেলিম হোসেন, মোঃ ফারুক হোসেন খান, মহানগর মহিলা দলের সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার নুরুন্নাহার, সহসভাপতি কেয়া শারমিন, মহানগর মহিলাদল নেত্রী ফিরোজা বেগম, হাসিনা মমতাজ, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আলম, ৩৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আউয়াল সরকার, বিএনপি নেতা মোঃ মাহফুজুর রহমান ও ৪৯নং ওয়ার্ড বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক মোবারক হোসেন মিলন।

এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শওকত হোসেন সরকার বলেন, যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন দল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। গাজীপুরে ইতোমধ্যে ৩০জনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।